শুভেন্দু ভট্টাচার্য, সুদীপ চক্রবর্তী ও অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কোচবিহার: নিয়োগ দুর্নীতির  (SSC Recruitment Scam) অভিযোগে বিদ্ধ তিনি। একই সঙ্গে আক্রমণ শানিয়ে চলেছেন বিরোধীরা। পরিবার এবং আত্মীয় মিলিয়ে ৩২ জনকে সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ। তা নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী (Paresh Adhikary)। এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানিয়ে দিলেন তিনি। 


শুভেন্দুর অভিযোগ খারিজ পরেশের


পরেশের পরিবারের ৩২ জনের সরকারি চাকরি পাওয়া সম্প্রতি প্রশ্ন তোলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।  কিন্তু শুভেন্দুর অভিযোগ  'মিথ্যে' বলে উড়িয়ে দিয়েছেন পরেশ। তিনি বলেন, "যেসব কাগজে দেওয়া হচ্ছে, এগুলো সব মিথ্যের বেসাতি। যার ফলে নতুন করে কিছু এখানে বলার কিছু নেই। চাকরি নিয়ে যেগুলো বলা হচ্ছে, যে আমার বউয়ের চাকরি, ইয়ের চাকরি, ওগুলো আমার বিয়ের আগে। তাঁরা এখন অবসরের পথে। আমার দাদা অবসর নিয়ে নিয়েছে। এগুলি দিয়ে একটা লিস্ট তারা করেছে। যেগুলি বিচারাধীন, সেই বিষয়ে তো নতুন করে কিছু বলা যাবে না।" তবে CBI-এর হাতে থাকা নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্ত নিয়ে কিছু বলতে চাননি। 


নিয়ম ভেঙে মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীকে (Ankita Adhikari) স্কুলে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে, ইতিমধ্যেই পরেশকে ৩ দিনে সাড়ে ১৬ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে CBI। আদালতের নির্দেশে শিক্ষকের চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছেন মেয়ে অঙ্কিতা। মেয়েকে ৪১ মাসের বেতন ফেরতেরও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। 


আরও পড়ুন: Kolkata News: ফের রাস্তায় নামলেন নার্সিং চাকরিপ্রার্থীরা, স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগের দাবিতে মিছিল


এই প্রেক্ষাপটে CBI-এর কাছে প্রথমবার হাজিরা দেওয়ার ১২ দিন পর, মুখ খুললেন রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী। বিরোধীদের তোলা সব অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।


সম্প্রতি SSC নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের মামলার তদন্তভার CBI-এর হাতে তুলে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। তার পরই পরেশ অধিকারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। উল্টোদিকে, তাঁর মেয়েকে শিক্ষকের চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেয় আদালত। 


এ নিয়ে তৃণমূল নেতা ও রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরব হয় বিরোধীরা। গত ২৮ মে, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু ট্যুইটারে একটি তালিকা প্রকাশ করেন। সেখানে, পরেশ অধিকারীর পরিবারের আত্মীয়স্বজন মিলিয়ে মোট ৩২ জনের নাম ও তাঁরা কোথায় চাকরি করেন, তার বিবরণ দেওয়া ছিল। 


নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে মন্ত্রীর


বাম আমলে ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী। এরপর ২০১৮ সালের ১৭ অগাস্ট ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে যোগ দেন তৃণমূলে। বিরোধীদের অভিযোগ, পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনদের চাকরি পাওয়ার নেপথ্যে হাত রয়েছে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এখনও সরাসরি কথা হয়নি তাঁর, সিবিআই-ও নতুন করে ডেকে পাঠায়নি বলে জানান পরেশ। বুধবার কোচবিহারে জেলা কমিটির বর্ধিত বৈঠকে যোগ দেন তৃণমূল নেতা তথা বিধায়ক পরেশ অধিকারী। সেখানেই মুখ খোলেন।