কলকাতা: ভরা পুজোয় ফের চোখ ভিজল শহরের এক পরিবারের। ডেঙ্গিতে একরত্তিকে হারাল পার্কসার্কাসের পরিবার। এদিকে গত কয়েকমাসে মূলত যা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছিল, তা হল বর্ষা। বৃষ্টির জমা জল খলনায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু বর্ষা চলে গেলেও পিছু ছাড়ল না ডেঙ্গি। মাত্র ২ মাস হয়েছিল , পৃথিবীর আলো দেখেছিল সে। তবে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে চলে যেতে হল তাঁকেও। 


 ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে পার্ক সার্কাসে মৃত্যু হয়েছে তিলজলার শিশুর। জানা গিয়েছে, ওই শিশুর বয়েস মাত্র ২ মাস। ২৯ সেপ্টেম্বর জ্বর নিয়ে ভর্তি করা পার্ক সার্কাসের ইন্সটিটিউট অফ চাইল্ড হেল্থ-এ। পরদিনই ডেঙ্গি রিপোর্ট পজিটিভ আসে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পিআইসিইউ-তে দেওয়া হয় ডেঙ্গি আক্রান্ত শিশুকে। ১৪ অক্টোবর মৃত্যু, ডেথ সার্টিফিকেটে সিভিয়ার ডেঙ্গির উল্লেখ। এই বছরে রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৫। শুধুমাত্র কলকাতাতেই মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। 


সদ্য ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছে দমদম পুরসভা এলাকার এক বাসিন্দা। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে (Beleghata ID Hospital) ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গত সোমবার জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ওই যুবক। মৃতের ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গির উল্লেখ ছিল।ডেঙ্গি নিয়ে ক্রমশ উদ্বেগ বাড়ছে কলকাতা তথা বঙ্গে। অক্টোবরের শুরুর আগে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে  দক্ষিণবঙ্গের ১৭টি জেলা ও স্বাস্থ্য জেলায় নতুন করে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬১৩ জন। গোটা রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৬ হাজার ১৪০। চলতি মরশুমে আক্রান্তের নিরীখে প্রথম স্থানে উত্তর ২৪ পরগনা, দ্বিতীয় কলকাতা। তিন নম্বর স্থানে মুর্শিদাবাদ।


যদিও সম্প্রতি এনিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন ফিরহাদ হাকিম। ফিরহাদের কথায়, 'ডেঙ্গি হল ন্যাচেরাল ক্যালামেটি (Natural Calamity)। ডেঙ্গি এই পরিস্থিতিতে আমরা যেখানে থাকি, সেখানে আছে। থাকবে। ম্যালেরিয়া-ডেঙ্গি ১০০ বছর আগেও ছিল। ১০০ বছর পরেও থাকবে।' তিনি আরও বলেছেন,'  যেখানে আমাদের এই শহরে আদ্রতায় ভরা আবহাওয়া, সেখানে বাংলায় সবথেকে ভাল ব্যবস্থা হয়েছে। তবে এমন অনেক জায়গা আছে, বিশেষ করে কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থাগুলিতে, আদালতের চত্বরেও ডেঙ্গির লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে,  সেই কারণ আমাদের একটু অসুবিধা হচ্ছে। ডেঙ্গি এখনও অত্যন্ত নিয়ন্ত্রণে, এবং তার কৃতিত্বটা স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।'


আরও পড়ুন, 'চাকরির তালিকায় অযোগ্য প্রার্থীরা' ! CBI-র জালে আরও এক কর্তা


 সম্প্রতি কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'মশা অতি অবুঝ প্রাণী। মানুষের মধ্যে জন্ম নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যত সহজে সচেতনতা প্রচার করা যায়,মশার মধ্যে তত সহজে প্রচার করা যায় না।' তাঁর মতে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে সবরকম ভাবে চেষ্টা করছে পুরসভা ও প্রশাসন। তিনি বলেন, 'ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন, রাজ্য সরকার, পুরসভা সবটাই করছে। আমরা যারা সাধারণ নাগরিক তাঁদের কিছুটা কর্তব্য রয়েছে। বাড়িতে, বাগানে, ছাদে জল জমিয়ে রাখবেন না। প্রত্যেকটা ছাদ সরকারের পক্ষে দেখা সম্ভব নয়। ফলে এ ব্যাপারে সরকার এবং নাগরিক হাতে হাত মিলিয়ে করতে হবে।'