অরিত্রিক ভট্টাচার্য, হাওড়া: পার্ক সার্কাসে পুলিশকর্মীর ছোড়া এলোপাথাড়ি গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন নিরীহ মহিলা। সেই হাড়হিম করা ঘটনার পর হাওড়ার দাসপুরে রিমার বাড়িতে শোকের ছায়া। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে মেয়েকে হারিয়ে কান্নায় লুটিয়ে পড়লেন মা। আকস্মিক ঘটনায় শোকস্তব্ধ গোটা পরিবার। এই ঘটনার পর আজ মৃত তরুণীর মাকে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 


মমতার ফোন


এদিন মৃতার মা কথা বলতে গিয়েও কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করেছেন একথা জানিয়েই  তিনি বলেন, ‘ দিদি ফোন করেছিলেন। সান্ত্বনা দিলেন। বলেন যে আমি তো মেয়েকে ফেরত দিতে পারব না। আমি পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব। যতটা পারব করব। মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। চেয়েছেন ভাইয়ের বায়োডেটা। চাকরির ব্যবস্থা করবেন বলেছেন। আর আমার স্বামীর অবস্থার কথা জিজ্ঞেস করলেন। এই বয়সে আর কাজ করতে পারবেন না শুনে বলেন ছোটখাটো দোকান করার ব্যবস্থা করে দেবেন।" 


'তছনছ সংসার'


আর অভিযুক্ত-মৃত পুলিশের এই কাজ প্রসঙ্গে মৃতার মা বলেন, "আমি দিদিকে বলেছি, এরকম লোককে না রাখাই ভাল। আজ আমার সংসার তছনছ হয়ে গেল।" 


প্রসঙ্গত পার্ক সার্কাসে পুলিশকর্মীর ছোড়া এলোপাথাড়ি গুলিতে, মৃত্যু হয়েছে হাওড়ার বাসিন্দা, ২৮ বছরের রিমা সিংহের। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য রিমা, ফিজিওথেরাপির প্রশিক্ষণ নিতেন। শুক্রবার বিয়ের পাকা দেখা থাকলেও, সেই কাজে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু, আর ফেরা হল না। শুক্রবারও কাজের সূত্রেই বেরিয়েছিলেন রিমা। কে জানত, পথে এই বিপদ অপেক্ষা করে রয়েছে! দুপুরে বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনের অদূরে, কলকাতা পুলিশের কর্মী যখন SLR থেকে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়ছেন। দুর্ভাগ্যক্রমে ঠিক তখনই সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন রিমা। কিছু বোঝার আগেই গুলি ছুটে এসে লাগে তাঁর শরীরে। হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতেই মৃত্যু হয়। 


সম্প্রতি রিমার বিয়ের কথা শুরু হয়েছিল। শুক্রবার ছিল পাকা দেখা। শুক্রবার এই ঘটনার খবর পেয়ে রিমার বাড়িতে আসেন, সেই ব্যক্তি। যে মেয়ের কন্যাদানের জন্য মা-বাবা মনে মনে তৈরি হচ্ছিলেন, এখন তাঁর শেষকৃত্য করতে হবে তাঁদের। নিয়তি যে এই দিনও দেখাবে, কে জানত।