কলকাতা: দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে বহু নেতারই। কিন্তু বান্ধবীর বাড়ি থেকে টাকার পাহাড়, কাঁড়ি কাঁড়ি গয়না উদ্ধারের ঘটনা তেমন চোখে পড়ে না। তাই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজের যত না বেশি ক্ষতি করেছেন, দলকে তার চেয়ে বেশি বিড়ম্বনায় ফেলেছেন বলেই শোনা যেত এতদিন। বিশেষ করে বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেও অস্বস্তি বলে জানা যায়। কিন্তু তাঁর নিজের মধ্যে কোনও অস্বস্তি নেই বলে এবার জানালেন খোদ পার্থ। (Partha Chatterjee & Arpita Mukhopadhyay)

Continues below advertisement

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তিন বছর তিন মাস জেলে কাটিয়ে, একদিন আগেই জামিনে মুক্ত হয়েছেন পার্থ। বুধবার একান্ত সাক্ষাৎকারে এবিপি আনন্দের মুখোমুখি হন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। আর সেখানেই ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে খোলামেলা জবাব দেন তিনি। বলেন, “অর্পিতা আমার বান্ধবী। তাতে অসুবিধার কী আছে? আপনারা যদি শোভন-বৈশাখীকে দেখাতে পারেন, তা দেখাবেন!” (Partha Chatterjee)

২০১৭ সালের জুলাই মাসে পার্থর স্ত্রী বাবলি চট্টোপাধ্যায় মারা যান। সেই পর্যন্ত ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অন্তত কোনও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়নি পার্থকে।  কিন্তু নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে অর্পিতার সঙ্গে পার্থর যোগসূত্র সামনে আসতে আগুনে ঘি পড়ে কার্যত। তৃণমূলের অন্দরেও অস্বস্তি তৈরি হয়। যদিও পার্থর বক্তব্য, “দলে অনেককে খুঁজে পাবেন, সৌগতদাকে খুঁজে পাবেন, যারা যারা আছে, দিদিমণি খবর রাখেন না, তা নয়! সিরিয়াল দেখেন, সিনেমা আর্টিস্টদের খবর রাখেন, তাদের ক'টা বদল হল, আর ক'টা থাকল, তিনি খবর রাখেন না? সব রাখেন।

Continues below advertisement

অর্পিতাকে বান্ধবী বলে মানতে কোনও অস্বস্তি নেই বলে জানান পার্থ। তাঁর কথায়, “সদর্পে বলছি। তাতে কী হবে? যার বউ আছে, তার যদি দু'টো থাকতে পারে, আমার বউ নেই, একটা বান্ধবী থাকতে পারে না! বাহ্, এ কী? আমি সদর্পে বলছি। হাঁটুর বয়সি, অমুক বয়সি বলে যারা বিদ্রুপ করেছিল, তাদের প্রতি সহানুভূতি হয়। কারণ তাদের সবটাই আমি জানি। তাই বলে তাদের অপমান করতে চাই না। ব্যক্তিগত ভাবে আমি কাউকে আক্রমণ করিনি কখনও, কেউ বলতে পারবে না। আমি সব সময় তিরবিদ্ধ হয়েছি। অনেকটা ভীষ্মের মতো অবস্থা। পাল্টা তির মারিনি। তবে জেলে গিয়ে শিখেছি, যদি তির না মারতে পারো, তাহলে জেলই তোমার স্থান হবে।” 

নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে অর্পিতার বাড়ি থেকেই টাকার পাহাড় উদ্ধার হয়েছিল। উদ্ধার হয় বহুমূল্য গয়নাগাঁটিও। পরবর্তীতে পার্থ ও অর্পিতার যৌথ সম্পত্তিরও হদিশ মেলে। তবে সেখানেই শেষ নয়। আদালতে ভার্চুয়াল শুনানি চলাকালীন, দু’জনের মধ্যে চলা ইশারা-ইঙ্গিত নিয়েও মুখরোচক খবর ছড়িয়েছিল। গত বছর নভেম্বর মাসেই জামিনে বেরিয়ে আসেন অর্পিতা। একদিন আগে জেল থেকে বেরিয়েছেন পার্থও। কিন্তু জেল থেকে বেরনোর পর কি অর্পিতার সঙ্গে ফের যোগাযোগ করেছেন তিনি? এককথাতেই উত্তর সারেন পার্থ। বলেন, “না।” তবে অর্পিতার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া টাকা ও গয়না নিয়ে এদিনও সরাসরি কোনও উত্তর দেননি পার্থ। বরং জানান, যাঁর বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার হয়েছে, তিনিই উত্তর দেবেন।