কৌশিক গাঁতাইত, আসানসোল, পশ্চিম বর্ধমান: আর কদিন পরেই আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। মনোনয়নপত্রও জমা দেওয়া শেষ। চতুর্মুখী লড়াইয়ের আগে এমনিতেই তপ্ত আসানসোল। তার মধ্য়েই এবার আসানসোলে পাওয়া গেল বেআইনি অস্ত্র কারখানার হদিশ। পুলিশ জানিয়েছে মুঙ্গেরে বেআইনি অস্ত্র ব্যবসায়ী চক্রের সঙ্গে জড়িত রয়েছে গোটা বিষয়টি।
কুলটি, হীরাপুরের পর এবার সালানপুর থানার চিতলডাঙা। সেখানেই একটি বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্ধেক তৈরি অস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির সামগ্রী। গোপন সূত্রে খবর পেয়েছিল সালানপুর থানার রূপনারায়ণপুর ফাঁড়ির পুলিশ (police)। তারপরেই হানা দেয় পুলিশ বাহিনী। খোঁজ মেলে অস্ত্র কারখানার। যে বাড়িতে কারখানা তৈরি হয়েছিল। সেটির মালিকেরও খোঁজ পেয়েছে পুলিশ। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে ওই বাড়িটির মালিকের নাম দীনেশ চৌধুরি। তিনি চিত্তরঞ্জনের বাসিন্দা। তাঁর কাছ থেকে কয়েকজন বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। তারা সকলেই বিহারের মুঙ্গেরের বাসিন্দা। ফলে গোটা ঘটনায় বিহারের মুঙ্গেরের অস্ত্রচক্রের যোগ খুঁজে পাচ্ছে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম রাজকুমার চৌধুরি, প্রবীণ কুমার ও মহম্মদ ইকবাল। তিনজনই মুঙ্গেরের বাসিন্দা। আটক করা হয়েছে বাড়িটির মালিক দীনেশ চৌধুরিকেও। পুলিশ জানিয়েছে, এই বাড়িটিতে একাধিক আধুনিক অস্ত্র অর্ধেক তৈরি হতো। তারপর সেগুলি পাঠানো হতে মুঙ্গেরে (munger)। সেখানেই সম্পূর্ণ করা হতো বাকি অস্ত্রগুলি। এদিন বাড়িটিতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে বারোটি অসম্পূর্ণ আগ্নেয়াস্ত্র। তার সঙ্গেই উদ্ধার হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র (firearms) তৈরির সরঞ্জাম এবং লেদ মেশিন। কীভাবে বসতি এলাকায় ভিনরাজ্যের দুষ্কৃতীরা কারখানা চালু করতে পারল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।
কদিন আগেই আসানসোলের পুরভোট হয়েছে। সেই নির্বাচন ঘিরে একাধিক ঝামেলাও হয়েছিল। ফের লোকসভা উপনির্বাচনের আগে এলাকা অশান্ত হবে কিনা তা নিয়ে আশঙ্কায় সাধারণ নাগরিকরা। যদিও কোনও সমস্যা হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন।
এই প্রথম নয়, এর আগেও আসানসোলের বিভিন্ন এলাকা থেকে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। খোঁজ মিলেছে একাধিক অস্ত্র কারখানার। গত বছরেই একাধিক বার অস্ত্র কারখানার খোঁজ মিলেছিল। আসানসোলের হীরাপুরে পাওয়া গিয়েছিল অস্ত্র কারখানা। একতলা বাড়ির ভিতরে সেপটিক ট্যাঙ্কের আদলে তৈরি করা হয়েছিল বাঙ্কার। সেখানেই তৈরি হতো অস্ত্র। তার আগে কুলটিতেও একটি নির্মীয়মান বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয়েছিল অস্ত্র।
আরও পড়ুন: ট্রাকের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কা, অন্তঃসত্ত্বা মহিলাসহ ৩ জনের মৃত্যু