মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে উঠল বাড়ি জবরদখলের অভিযোগ। বাড়ি ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া দেন না তৃণমূল নেতা। এমনকী বাড়ি ছাড়তে বললে হুমকি দেন তিনি। দুর্গাপুর NIT-এর এক অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপকের তরফে এমনই অভিযোগ তোলা হয় তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছন অভিযুক্ত। 


লোকসভা ভোটে, পুরএলাকায় তৃণমূলের ফল খারাপ হওয়ার প্রেক্ষিতে, সোমবারই পুর পরিষেবার পাশাপাশি, বিভিন্ন জায়গায় বেআইনি দখলদারি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। তারপরই নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ ও প্রশাসন। বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে জবরদখল উচ্ছেদ অভিযান। সেই ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে, তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলরের বিরুদ্ধেই উঠল বাড়ি জবরদখলের অভিযোগ। অভিযোগ করলেন, কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দুর্গাপুর NIT-এর এক অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। অভিযোগ, তাঁর বাড়ি দখল করে বসে আছেন তৃণমূলেরর বিদায়ী কাউন্সিলর। 


অভিযোগকারী অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সত্য়নারায়ণ সরকার বলেন, 'আমি ছাড়তে বললে ছাড়ছে না। হুমকি দিচ্ছে।'


অভিযোগকারীর দাবি, ২০২২ সালের মার্চ মাসে দর্গাপুরের বেনাচিতি বাজারের কমলপুরে থাকা তাঁর বাড়ির একাংশ ভাড়া দেন, দুর্গাপুর পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর ছবি নন্দীকে। বাড়ি ভাড়া নিয়ে ডেন্টাল ক্লিনিক তৈরি করেন বিদায়ী কাউন্সিলর। অভিযোগ, প্রথম কয়েকমাস সব ঠিক থাকলেও, পরে ভাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেন অভিযুক্ত। এখানেই শেষ নয়, ভাড়া চাইতে গেলে কিংবা বাড়ি খালি করতে বললে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সত্যনারায়ণ সরকারের অভিযোগ, 'উনি ভাড়া নিল। এখন আমি ছাড়তে বললে ছাড়ছে না। হুমকি দিচ্ছে। এমনকী তালা মেরে দিয়েছেন ঘরে গিয়ে।'


অভিযুক্ত ছবি নন্দী বলেন, 'আমি ২০-২৫ লক্ষ টাকা খরচ করছি। সামনে ভোট আমাকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে।'


১৮ জুন দুর্গাপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন অবসরপ্রাপ্ত অধ্য়াপক। পাশাপাশি, অভিযোগ জানানো হয় দুর্গাপুর পুরসভার প্রশাসিক মণ্ডলির পুর প্রধানের কাছেও। প্রশাসকমণ্ডলী দুর্গাপুর পুরসভার চেয়ারপার্সন অনিন্দিতা মুখোপাধ্য়ায় বলেন, 'জানতে হবে পুরো বিষয়টা নিয়ে। আমি কথা বলব। যদি কোনও এমন কোনও ঘটনা ঘটে থাকে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'


তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে 'জবর দখল'-এর অভিযোগ নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। পশ্চিম বর্ধমানের বিজেপি সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী দুইদিন আগে কাউন্সিলরদের ভৎর্সনা করেছেন। এদিকে কাউন্সিলর নিজে ভাড়া দেয়নি।' বিরোধীদের অভিযোগ, মুখ্য়মন্ত্রী কাউন্সিলরদের কড়া বার্তা দিলেও তা যে কেউ ধর্তব্য়ের মধ্যেই আনছেন না, এই ঘটনা তারই প্রমাণ।


আরও পড়ুন: কতগুলি সিমকার্ড আপনার নামে? নয়া আইন ভাঙলে শুরুতেই মোটা টাকা জরিমানা