মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: বেসরকারি কারখানায় দুর্ঘটনা। মারা গেলেন এক শ্রমিক। শ্রমিকের মৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা দুর্গাপুরে। রবিবারের এই ঘটনার জেরে প্রবল বিক্ষোভ মৃতের আত্মীয়দের। কারখানা কর্তৃপক্ষকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ। ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ না পাওয়া গেলে বন্ধ থাকবে কারখানার যাবতীয় কাজ, হুঁশিয়ারি দিয়েছে তৃণমূলষ। শ্রমিক মৃত্যুতে দুঃখপ্রকাশ করে, গোটা ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধেই আঙুল তুলেছে জেলা বিজেপি। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে উঠে যায় বিক্ষোভ।
দুর্গাপুরের লাইদোহার হেতেডোবা শিল্পতালুকের সামনে একটি বেসরকারি কারখানার ঘটনা। মৃত শ্রমিকের নাম তরুণ ঘোষ। মৃতের বয়স চল্লিশ বছরের আশপাশে। রবিবার সকালে কারখানার ভিতর কাজ করার সময় মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে। লোহার রডের ওই কারখানায় ম্যাগনেটিক ক্রেনের সাহায্যে মালপত্র ওঠানামা করানো হয়। কোনওভাবে যান্ত্রিক সমস্যায় ক্রেনের চুম্বকশক্তি কাজ করেনি। ভারী জিনিসের ধাক্কা লাগে তরুণের। সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এরপর উত্তেজিত শ্রমিক এবং নিহতের আত্মীয়-পরিজনরা উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবিতে তুমুল বিক্ষোভ শুরু করে কারখানার গেটের সামনে। বন্ধ হয়ে যায় উৎপাদন প্রক্রিয়া। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে লাউদোহা থানার পুলিশ, পৌঁছন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুজিত মুখোপাধ্যায়। উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানান, তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুজিত মুখোপাধ্যায়। মৃতের পরিবারের একজনের চাকরির দাবিতে সরব হন আন্দোলনকারীরা। কিন্তু কর্তৃপক্ষের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয় মৃত শ্রমিকের যতদিন চাকরি ছিল ততদিন প্রতি মাসে তিন হাজার টাকা করে দেওয়া হবে পরিবারকে। কিন্তু এই প্রস্তাবে রাজি ছিল না পরিবারের লোকজন। কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, কর্মীরা সবাই পুরুষ সেখানে নিহত শ্রমিকের স্ত্রীকে কাজে নেওয়া সম্ভব নয়। তাই এককালীন টাকা ও মাসে মাসে কিছু টাকার ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব দেওয়া হয়। আন্দোলনকারীদের চাপে এককালীন আট লক্ষ ও প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেওয়ার পর মেটে সমস্যা।
জেলা বিজেপি নেতৃত্বও অবিলম্বে শ্রমিক নিরাপত্তার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে।