সৌমেন চক্রবর্তী, কেশপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর:  পঞ্চায়েত ভোটের আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে ফের প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীবিবাদ।


ব্লক তৃণমূল পার্টি অফিসে তালা ঝোলালেন দলের নেতা-কর্মীদের একাংশ। মঙ্গলবার দুপুর থেকে তালাবন্দি কেশপুর ব্লক পার্টি অফিস। দরজায় ঝুলছে ৩টি বড় বড় তালা। কেশপুরের তৃণমূল বিধায়ক শিউলি সাহার দাবি, কারা তালা ঝুলিয়েছে, দল তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিধায়ক-সহ কেশপুরের যুযুধান নেতাদের নিয়ে আজ বৈঠক ডেকেছেন জেলা কোঅর্ডিনেটর অজিত মাইতি। পঞ্চায়েতের আগে ১০০ দিনের কাজের টাকার বখরা নিয়ে কোন্দল, আগামীদিনে এভাবে কালীঘাটেও তালা ঝুলতে পারে। কটাক্ষ বিজেপি জেলা সভাপতির।


গতকাল দুপুরের পর থেকে খোলাই সম্ভব হলো না পার্টি অফিস। পরিস্থিতি সামাল দিতে দুপুর তিনটায় দুপক্ষ সহ বিধায়ক কে নিয়ে দুপুরে বৈঠক ডাকলেন তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর। ঘটনায় ক্ষুব্ধ কেশপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শিউলি সাহা।


তৃণমূল নেত্রীর বাড়িতে 'বোমা'
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নিউ ডেভেলপমেন্ট পাঁচপীর এলাকায় রেলের কোয়ার্টারে থাকেন তৃণমূল কর্মী প্রিয়াঙ্কার পরিবার। অভিযোগ, সম্প্রতি গভীর রাতেকেউ বা কারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বোমা ফেলে গিয়েছে তাঁর বাড়িতে। বাড়ির দেওয়ালে বোমা লেগে দেওয়ালে গর্তও তৈরি হয়েছে। বোমের সুতলি দড়িগুলো মাটিতে পড়েছিল বলে দাবি। ওই দিন রাতেই পুলিশে খবর দিলে পুলিশ পৌঁছে একটি বোমা উদ্ধার করে নিয়ে যায়। ওই ঘটনায় প্রিয়াঙ্কা খড়গপুর টাউন থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। প্রিয়াঙ্কার কথায়, 'আমি বাইরে বেরিয়ে দেখি ধোঁয়া ভর্তি। কেউ আমার বাড়িতে উদ্দেশ্য করে বোমা ফেলেছে। সেই বোমার ছিন্নবিচ্ছিন্ন অংশ পড়ে রয়েছে। বোমা যদি বাড়িতে ঢুকতো তা হলে আমাদের পরিবারের কেউ বাঁচতো না। কিন্তু কে বা কারা করেছে বলতে পারবে না। তা পুলিশ দেখবে।' তাঁর দাবি, দুটো বোমা ছোড়া হয়। একটা বোমা ফেটেছে এবং একটা বোমা পুলিশ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে। প্রিয়াঙ্কার অভিযোগ, তাঁকে টার্গেট করে তাঁর পরিবারকে ভয় দেখানোর জন্য কেউ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এই কাজ করেছে। তাঁর প্রতিবাদ স্তব্ধ করে দিতেই এই ঘটনা। প্রিয়াঙ্কার দাবি, 'যাদের বিরুদ্ধে আমি প্রতিবাদ করি তারাই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমার নিজের দলেরও হতে পারে এবং অন্য দলেরও হতে পারে। কার মনে কী আছে বলতে পারব না। আজ আমাদের পরিবার সবাই ভীত।'


অন্যও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ:
মালদহে, কোচবিহারেও বারবার তৃণমূলের অন্দরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উঠেছিল। মালদহে শাসকদলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানকে মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে লোহার রড দিয়ে মেরে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছিল প্রাক্তন ব্লক সভাপতি এবং পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষের দলব লের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে শাসক দলের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করেছিল বিজেপি।


আরও পড়ুন: বেআইনি বদলির অভিযোগ, ধর্নায় গ্রামীন ব্যাঙ্কের আধিকারিকরা