সোমনাথ দাস, পশ্চিম মেদিনীপুর: গালভরা প্রকল্পের নাম ছড়িয়ে দিকে দিকে। অথচ একদিন, দু’দিন নয়, টানা ছ’মাস পানীয় জল (Drinking Water) নেই এই বাংলার গ্রামেই। তাই সুজলা, সুফলা বাংলায় থেকেও মরুজীবনের অভিজ্ঞতা হচ্ছে স্থানীয়দের। ঘড়া, কলসি নিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে পানীয় জল বয়ে আনতে হচ্ছে তাঁদের। তবে এ নিয়ে হেলদোল নেই শাসক-বিরোধী কারও। বরং ভোটের অঙ্কে কে এগিয়ে বিচার করে, প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ তুলে পরস্পরকে দোষারোপ করতেই ব্যস্ত সকলে।


পানীয় জলের সঙ্কট পশ্চিম মেদিনীপুরে


বেশি দূর নয়, পশ্চিম মেদিনীপুরের (Paschim Medinipur News) ঘাটাল (Ghatal News) ব্লকের মনোহরপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত শ্রীপুর গ্রামেরই ঘটনা। গ্রামের ইতিউতি জলের কল বসানো রয়েছে যদিও। কিন্তু সেই কল থেকে কবে শেষ বার জল পড়তে দেখেছেন, পাঁজি ধরেও তা বলতে পারছেন না গ্রামবাসীরা। কারও কারও মতে, ঘরের কাছে পানীয় জল পেয়েছেন প্রায় ছ’মাস আগে। কিন্তু এই লম্বা সময় ধরে কেন বন্ধ পানীয় জল, তার কোনও জবাব নেই।


যথারীতি এই নিয়েও রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। শাসকদল তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলেছে বিরোধী পক্ষ বিজেপি। গ্রামের মোড়ে মোড়ে পোস্টার লাগিয়ে ধিক্কার জানিয়েছে তৃণমূলকে। তাতে বলা লেখা রয়েছে, ‘টানা ছ’মাস ধরে পানীয় জল বন্ধ। তৃণমূল নেতারা এখন চুপ কেন? জবাব চাই, জবাব দাও।’ কিন্তু তাঁরাই বা এ নিয়ে তব্দির করছেন না কেন? তাতে বিজেপি-র স্থানীয় নেতৃত্বের জবাব, বিধানসভা নির্বাচনে ওই বুথে এগিয়ে রয়েছে তাঁদের দল।  তাই তৃণমূল নেতারা এলাকায় পানীয় জলের লাইন কেটে দিয়েছেন।


আরও পড়ুন: Daily Shironam ( 23.04.22) কলকাতার রাস্তায় বিপুল পরিমাণ বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার : ABP Live Podcast


তবে এই তরজার মধ্যে পড়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন গ্রামের মহিলারাই। বহু দূর থেকে পানীয় জল এনে সেই জলে সংসার চালাতে হচ্ছে তাঁদের। গ্রামবাসীদের দাবি, দ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা করুন পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ।


জল নিয়ে কার্যত চুলোচুলি


সমস্যার কথা যদিও স্বীকার করেছেন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জয়দেব দোলই। রাজনৈতিক তরজা উড়িয়ে তিনি বলেন, “কিছুদিন আগে পূর্ত দফতর রাস্তার কাজে হাত দেওয়ায় জলের পাইপ সাময়িক কেটে দেওয়া হয়েছিল। সেই পাইপলাইন নতুন করে মেরামত না হওয়ার জন্যই পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে।” দ্রুত ওই পাইপলাইন মেরামত করে পানীয় জল সরবরাহ ঠিক করে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। তবে স্থানীয়দের দাবি, রাস্তার কাজ বেশ কিছুদিন আগেই সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। তবুও গ্রাম পঞ্চায়েত কোনও উদ্যোগ নেয়নি।