মুম্বই: পুলিশ থেকে গোয়েন্দা, বাদ যায়নি কেউ। ভাগ্যজয় করতে গিয়ে পুলিশ-প্রশাসনকে ঘোল খাইয়ে ছেড়েছিল তারা। পর্দার বাইরে এ বার রাজনীতিতেও ‘বান্টি-বাবলির’ (Bunty Aur Babli) দাপট। তাতে জেরবার মহারাষ্ট্রের পুলিশ ও প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের (Uddhav Thackeray) বাড়ি আগলে পড়ে রয়েছে সকলে। যদিও ‘বান্টি-বাবলি’র দাবি উপদ্রব ঘটানোর কোনও অভিসন্ধি নেই তাঁদের। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে শুধু হনুমান চালিশা জপ করতে চান তাঁরা, যাতে রাজ্যের উপর থেকে সঙ্কট কেটে যায়, শান্তি এবং স্থিতাবস্থা ফেরে। আর তাতেই হইহই রইরই পড়ে গিয়েছে প্রশাসনের অন্দরে।


রাজনীতিতে লাউডস্পিকার তরজা


মসজিদে লাউডস্পিকার বাজানো নিয়েই ঘটনার সূত্রপাত। আগুনে ঘি ঢালার কাজটি করেছিলেন উদ্ধবের তুতো ভাই রাজ ঠাকরে। ইদের আগে রাজ্যের সমস্ত মসজিদ থেকে লাউডস্পিকার (loudspeaker Row) খুলে ফেলতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। নইলে তার পাল্টা হনুমান চালিশা (Hanuman Chalisa Row) বাজাবেন এবং আইন নিজেদের হাতে তুলে নেবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার প্রধান। রাজের সেই হুঁশিয়ারিকে সমর্থন জানিয়েছিল বিজেপি-ও। তাতে ভ্রাতুষ্পুত্র আদিত্য ঠাকরের কটাক্ষের মুখেও পড়েছিলেন তিনি। কিন্তু লাউডস্পিকার বিতর্ক উদ্ভবের দোরগোড়া পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে।


এর নেপথ্যে রয়েছেন রাজনীতিক দম্পতি নবনীত রানা এবং তাঁর স্বামী রবি রানা। অমরাবতীর নির্দল সাংসদ নবনীত। তাঁর স্বামী আবার বিদর্ভের নির্দল বিধায়ক। মসজিদ তেকে লাউডস্পিকার খোলা না হলে, শনিবার উদ্ধবের বাড়ির সামনে তারস্বরে হনুমান চালিশা জপ করবেন বলে সম্প্রতি ঘোষণা করেন তারা। শিবসেনা মুখপাত্র তাঁদের এই হুঁশিয়ারিকে ফাঁকা আওয়াজ বলে কটাক্ষ করেন। দম্পতিকে ‘বান্টি-বাবলি’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি। হনুমান চালিশা, রাম নবমী ধর্মীয় বিষয়, কেরামতি দেখানোর মাধ্যম নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।


আরও পড়ুন: Nitish Kumar Update: পাঁচ বছর পর ফের পাশাপাশি, তেজস্বীর ইফতার পার্টিতে নীতীশ, সমীকরণ বদলের ইঙ্গিত!


কিন্তু এই ঘটনায় শনিবার সকাল থেকে চরম উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি হয়েছে মহারাষ্ট্রে। উদ্ধবের বাংলো ‘মাতোশ্রী’র বাইরে মোতায়েন রয়েছে বিরাট পুলিশবাহিনী। মাতোশ্রী যাওয়ার রাস্তা ব্যারিকেড বসিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উদ্ধবের বাড়ির বাইরে ভিড় জমিয়েছেন সেনা-কর্মীরাও। আবার খার এলাকায় ওই দম্পতির বাড়ির বাইরেও উপচে পড়ছে ভিড়। সেখানে তাঁদের ভজন শোনানোয় উদ্যোগী হয়েছেন সেনা-কর্মীরা। তাতে পুলিশ মোতায়েন করতে হয়েছে সেখানেও। তাতেই তেতে রয়েছে মুম্বই।


তেতে রয়েছে মুম্বই


এর আগে ওই দম্পতিকে অপরাধ আইনের ১৪৯ ধারায় নোটিস ধরিয়েছিল মুম্বই পুলিশ, যার আওতায় বাড়ির বাইরে পা রাখার দায়েও কারও বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা যেতে পারে। আইন-শৃঙ্খলাভঙ্গ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ওই দম্পতিকে। কিন্তু তার পরেও হুঁশিয়ারি থেকে পিছু হটেননি ওই দম্পতি। তাতে ‘মাতোশ্রী’র আশেপাশে দেখা গেলে তাঁদের ‘মহাপ্রসাদ’ খাওয়ানো হবে বলে হুশিয়ারি দিয়ে রেখেছিলেন শিবসেনা সাংসদ বিনায়ক রাউতও।


শিবসেনার অভিযোগ, রাজ্যের জোট সরকারের বিরুদ্ধে বৃহস্ততর ষড়যন্ত্র চলছে। তারই ফলস্বরূপ এমন হুঁশিয়ারি। রাজ এবং ওই দম্পতিকে বোড়ে করে আসলে বিজেপি আড়াল থেকে ষড়যন্ত্র কষছে বলেও অভিযোগ তোলে তারা। কারণ এর আগে রাজ্যে বিজেপি-শিবসেনার জোট সরকারকে সমর্থন জানিয়েছিলেন ওই দম্পতি। কিন্তু শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেসের জোট সরকারের বিরুদ্ধে তারা।