সৌমেন চক্রবর্তী ও বিটন চক্রবর্তী, পশ্চিম মেদিনীপুর: রাজ্য সরকারের অত্যন্ত সাধের প্রকল্প লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। মুখ্যমন্ত্রীর ভাবনা থেকেই তৈরি এই প্রকল্প। নানা সময় এই প্রকল্পের প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। অথচ সেই প্রকল্পই বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার তৃণমূলের চেয়ারম্যান অমল পণ্ডা!বিরোধীদের প্রশ্ন, মহিলাদের আর্থিক সাহায্যের এই প্রকল্প কি তাহলে শুধু ভোট কেনার হাতিয়ার?
প্রকল্পের সুবিধা:
গতবছরের বিধানসভা ভোটের আগে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রকল্প চালু করেন তিনি। যেখানে মহিলারা মাসে ৫০০ টাকা করে আর্থিক সুবিধা পান। আর তফসিলি এবং উপজাতিভুক্ত মহিলারা প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে সাহায্য পান।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে, সভায় মহিলাদের উপস্থিতি কম বলে, সেই প্রকল্প বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল চেয়ারম্যান! তাকে ঘিরেই ফের শুরু রাজনৈতিক তরজা। সরকারি প্রকল্প কি মানুষের উপকারের জন্য? না কি নিছকই ভোট-পাওয়ার হাতিয়ার? দীর্ঘদিনের এই বিতর্ক ফের উস্কে দিল লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রল্প নিয়ে ঘাটালের শীর্ষ তৃণমূল নেতার এই বিতর্কিত মন্তব্য!
কী বলেছেন অমল:
বৃহস্পতিবার দাসপুরে তৃণমূলের শাখা সংগঠনের কর্মী সম্মেলন ছিল। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পূর্ণেন্দু বসু। সেখানেই ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার তৃণমূলে চেয়ারম্যান অমল পণ্ডা বলেন, 'পরিসংখ্যান দেখলাম, মেয়েদের সংখ্যা একটু কম আছে, ছেলেদের সংখ্যা একটু বেশি। আপনাদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার আছে কিন্তু। আমি দাদাকে বলব,...আপনি দিদির সঙ্গে কথা বলে, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারটা বন্ধ করে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।' সভায় মহিলাদের উপস্থিতির হার কম দেখে কার্যত ক্ষুব্ধ হয়ে এই বিতর্কিত মন্তব্য করেন তৃণমূলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান। অমল পণ্ডাকে বলতে শোনা যায়, 'সংখ্যায় এত কম কেন? মেয়েদের সংখ্যা তো বেশি থাকতে হবে। ... আমাদের গ্রামের বেশিরভাগ মেয়ে তো চাষী। বেশিরভাগটাই তো তাঁরা ক্ষেত মজদুরের... কিষাণের লোক। তাঁদের সংখ্যা এত কম হবে কেন? আমি দুধ খাব, ডাক্তার বলছে, দুধ পুষ্টিকর খাদ্য, দুধের বিকল্প কিছু নেই। কিন্তু গরু আমি পালব না, এটা হয় দাদা? আপনি দুধ খাবেন, গরু পালবেন না।'
বিজেপির ক্ষোভ:
ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট বলেন, '৫০০ টাকা দিয়ে বোকা বানাচ্ছে, তারা সেটা বুঝতে পেরেছে। আজ স্বীকার করল। ভোট ব্যাঙ্কের জন্য ৫০০ টাকা দেয়। মায়েরা বোনেরা বুঝতে পেরেছে।'
কী বলছে তৃণমূল:
পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল বিধায়ক ও কোঅর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, 'অমল পণ্ডা ভুল করে বলেছেন। আমি ওকে ফোন করে বলে দেব। এটা এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ মিসটেক নয়। ভুল করে বলা। ভুল কথা নিয়ে কোট করে তৃণমূলকে অ্যাটাক করলে ঠিক নয়।'
আরও পড়ুন: পরেশ অধিকারীকে ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ ইডির, প্রশ্নের মুখে প্রথমবার অঙ্কিতাও