বিশ্বজিৎ দাস,পশ্চিম মেদিনীপুর: সুগারের রোগী মাসদেড়েক ধরে খেলেন হার্টের ওষুধ। ওষুধের দোকান থেকেই ওই ভুল ওষুধ দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। খড়গপুর টাউন থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে রোগীর পরিবার। ভুল ওষুধ দেওয়ার অভিযোগ মানতে নারাজ ওষুধ ব্যবসায়ী (Medinine Mishap)।
দেড়মাস ধরে ভুল ওষুধ খেলেন ৬২ বছরের বৃদ্ধ
পশ্চিম মেদিনীপুর (Paschim Medinipur) জেলার খড়্গপুর (Kharagpur) শহরের মালঞ্চ এলাকার ঘটনা। গত মে মাসে ৬২ বছরের শ্যাম মিশ্রের সম্প্রতি হাত ভেঙে যায়। কলকাতার এক নামী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করিয়েছিলেন। তাতে সুগারও ধরা পড়ে। তাই প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র লিখে দিয়েছিলেন ওই চিকিৎসক। বাড়ি ফিরে গিয়ে সেই মতো ওষুধ কেনেন এলাকার দোকান থেকে। তার পর টানা দেড়মাস ওষুধ খেয়ে যান।
কিন্তু ওষুধের দাম বড্ড বেশি হওয়ায় খরচ সামলাতে পারছিলেন না। শেষমেশ চিকিৎসকের কাছে এসে কম দামের অন্য কোনও ওষুধ যদি দেওয়া যায় আর্জি জানান ওই বৃদ্ধের ছেলে। কিন্তু ওষুধের পাতা দেখে ভিড় খান চিকিৎসক। দেখেন, প্রেসক্রিপশনে তিনি যে Vylda 50 ওষুধের কথা লিখেছিলেন, তার পরিবর্তে Vymada 50, যা কিনা হার্টের ওষুধ, তা খেয়ে যাচ্ছিলেন ওই বৃদ্ধ। অর্থাৎ দেড় মাস সুগারের ওষুধই খাননি ওই রোগী। তার উপর যে রোগ হয়ইনি তাঁর, সেই হার্টের ওষুধ খেয়ে গিয়েছেন একনাগাড়ে।
আরও পড়ুন: Agitation In School:'লেখাপড়া করতে চাই,' শিক্ষকদের বদলি রুখতে নদিয়ায় বিক্ষোভ পড়ুয়াদের
চিকিৎসকের কাছে সত্যতা জানতে পেরে ওই দোকানে ছুটে যান বৃদ্ধের ছেলে অমিত মিশ্র। ভুল ওষুধ দেওয়া নিয়ে দোকানদারের কাছে কৈফেয়ত চান তিনি। কিন্তু ওষুধের দোকানের মালিক অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। জানান, হতে পারে তিনিই ভুল নাম বলে ওষুধ নিয়ে গিয়েছেন। অমিত বলেন, "বাবার হাত ভাঙায় কলকাতায় ডাক্তার দেখাই। তাতে সুগার ধরা পড়ে। প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে ওষুধ কিনি। পরে ডাক্তারের কাছে গিয়ে জানতে পারি, সুগারের বদলে বাবা হার্টের ওষুধ খাচ্ছিল দেড়মাস ধরে।"
ইতিমধ্যেই ওই ওষুধ দোকানের বিরুদ্ধে খড়্গপুর টাউন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন অমিত। অমিত জানিয়েছেন, থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আগেই। এ বার ড্রাগস অ্যাসোসিয়েশনেও অভিযোগ দায়ের করবেন তাঁরা, যাতে অবিলম্বে ওই দোকানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।
অভিযোগ অস্বীকার দোকান মালিকের
ওই দোকানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, অভিযোগ স্বীকার করতে চাননি মালিক। তাঁর দাবি, রোগীর পরিবারের লোকই ভুল নাম বলে থাকবেন। কিন্তু প্রেসক্রিপশন দেখে কি ওষুধ দেননি তিনি! সে ক্ষেত্রে তো দু'টি ওষুধ সম্পূর্ণ আলাদা! কিন্তু তা-ও ভুল মানতে নারাজ ওই দোকানের মালিক। তিনি বলেন, "আমি আবারও বলছি আমাদের কোন ভুল নয়। আমরা ভুল ওষুধ দিই না।" রোগীর পরিবারের লোকজন প্রেসক্রিপশ না দেখিয়ে ওষুধ নিয়ে থাকতে পারেন বলেও দাবি করেন তিনি।