প্রদ্যোৎ সরকার, নদিয়া: শিক্ষক-শিক্ষিকাদের (teacher) বদলি (transfer) রুখতে স্কুলে তালা দিয়ে বিক্ষোভ (agitation) পড়ুয়া (students) ও অভিভাবকদের। নদিয়ার (nadia) তেহট্টের সাদিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ঘটনা। পরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি সামলান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা। তবে আজ কোনও ক্লাস হয়নি।  


কেন বিক্ষোভ?
 
বিক্ষোভকারী পড়ুয়া আরজানা খাতুন জানালেন, স্কুলে পড়ুয়াসংখ্যা বারোশোর বেশি। তাদের জন্য আগে ১৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা থাকলেও সম্প্রতি ৩ জন বদলি হয়ে চলে গিয়েছেন। ফলে এমনিতেই ক্লাস করানো কঠিন। তার উপর আরও কয়েকজন শিক্ষক বদলির আবেদন জানিয়েছেন বলে খবর। সেই আবেদন মঞ্জুর হয়ে গেলে স্কুলের পঠনপাঠন শিকেয় উঠবে, আশঙ্কা পড়ুয়াদের। আরজানার অভিযোগ, 'লকডাউনে এমনিতেই লেখাপড়া ঠিকঠাক হয়নি। স্কুল খোলার পর অন্তত তা ঠিকঠাক হবে বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু এবার আরও কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকাও বদলি নিয়ে চলে গেলে পড়াশোনা হবে কী ভাবে? আমাদেরও শিক্ষা চাই। আমরা গ্রামের ছেলেমেয়ে বলে কি শিক্ষা পাব না?' পড়ুয়াদের প্রতিবাদে এদিন সামিল হয়েছিলেন তাদের অভিভাবকরাও।


স্কুল কর্তৃপক্ষ যা বললেন...


সমস্যার জন্য নিয়োগ-প্রক্রিয়ায় বিলম্বকেই দায়ী করেছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সৌমী কুণ্ডু। তাঁর প্রশ্ন, '২০১৬ সালে শেষ এসএসসি পরীক্ষায় নিয়োগ হয়েছে। এখন ২০২২ সাল। এর মধ্যে কোনও নিয়োগ হয়নি না কেন? এর দায়ভার কি ছাত্ররা বহন করবে? করোনার সময় গত দুবছর গ্রামাঞ্চল থেকে স্কুলছুট হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়মিত হলে আজ এই সমস্যা তৈরি হত না।' কিন্তু সাদিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছ থেকে কেন বার বার বদলির আর্জি আসছে? শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, করিমপুর ২ নম্বর ব্লকের ওই স্কুলটি কার্যত নদিয়ার শেষ প্রান্তে। এখানে রেল যোগাযোগের কোনও বন্দোবস্ত নেই। সড়কপথে বাসে যাতায়াতই একমাত্র ভরসা। সেক্ষেত্রে তীব্র সমস্যায় পড়ছেন দূর থেকে পড়াতে আসা শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বদলির আর্জি সেই কারণেই। কিন্তু পড়ুয়াদের কী হবে?
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, এলাকার বেশিরভাগ স্কুলের ছবিই কার্যত এক। শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাবে ভুগতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। হালে পলাশিপাড়ার কড়েয়া নতুনপাড়া বিদ্যালয়েও এক শিক্ষকের বদলির সিদ্ধান্ত আটকাতে বিক্ষোভে নেমেছিল পড়ুয়ারা। পরে তাদের কথা ভেবে সেখানে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ওই শিক্ষক।
সাদিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও কি সে পথেই হাঁটবেন? বলবে সময়।


আরও পড়ুন:মালদায় কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের বাস উল্টে আহতের সংখ্যা ২০, আশঙ্কজনক ৩