সোমনাথ দাস, পশ্চিম মেদিনীপুর: বাড়ির মধ্যে থেকে গৃহবধূর অর্ধনগ্ন দেহ উদ্ধার (Dead Body Recovered)। পাড়ার মধ্যে এমন ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল চন্দ্রকোনায় (Chandrakona)। কর্মসূত্রে রাজ্যের বাইরে থাকেন মহিলার স্বামী। শিশুকন্যাকে নিয়ে একাই বাড়িতে থাকতেন তিনি। ওই মহিলাকে খুন (Alleged Murder) করা হয়েছে বলেই সন্দেহ প্রতিবেশিদের। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে চন্দ্রকোনা থানার পুলিশ।
পশ্চিম মেদিনীপুর (Paschim Medinipur News) জেলার চন্দ্রকোনা পুরসভার অন্তর্গত ৮ নম্বর ওয়ার্ড জয়ন্তিপুরের ঘটনা। সোমবার বাড়িতে দুধ পৌঁছে দিতে আসেন পাড়ার গোয়ালা। বেশ খানিক ক্ষণ ধরে ডাকাডাকির পরও কারও সাড়া পাননি তিনি। এর পর বেলা বাড়লেও মহিলার সাড়াশব্দ মেলেনি। শেষে শিশুকন্যার কান্নায় টনক নড়ে প্রতিবেশিদের। বাড়িতে ঢুকে খোঁজ নিতে গিয়ে মহিলার অর্ধনগ্ন দেহ উদ্ধার হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত মহিলার নাম সোমা পাল। বয়স ২৬ বছর। তাঁর স্বামী, ৩২ বছর বয়সি গোবিন্দ পাল পেশায় স্বর্ণ কারিগর। কর্মসূত্রে মুম্বইয়ে থাকেন। স্বামীর অনুপস্থিতিতে আড়াই বছরের কন্যাকে নিয়ে একাই বাড়িতে থাকতেন মহিলা। আত্মীয়-স্বজনদের যাতায়াত ছিল। তাঁর মৃত্যুতে রহস্য ঘনিয়ে উঠছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে ওই বাড়িতে দুধ পৌঁছে দিতে যান পাড়ার গোয়ালা। বেশ খানিক ক্ষণ ধরে ডাকাডাকি করেও মহিলা সাড়াশব্দ না পেয়ে ফিরে যান তিনি। এর পর বেলা বাড়লেও বাড়ি থেকে বেরোতে দেখা যায়নি মহিলাকে। বরং বাড়ির ভিতর থেকে তাঁর শিশুকন্যার কান্নার আওয়াজ পান প্রতিবেশিরা।
আরও পড়ুন: North 24 Parganas News: জমি নিয়ে বিবাদের জের, হাতের কোদাল কেড়ে নিয়ে কোপ, দুই ভাইপোর হাতে খুন কাকা
তাতে সন্দেহ হওয়ায় প্রতিবেশি এক মহিলা কী হয়েছে দেখতে যান। তিনি ঠেলতেই বাড়ির দরজা খুলে যায়। ডেকে সাড়া না পেয়ে এর পর প্রতিবেশি ওই মহিলা ঘরে ঢোকেন। সেখানেই খাটের নীচে মৃতদেহটি অর্ধনগ্ন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখতে পান তিনি।
সঙ্গে সঙ্গে পাড়া-পড়শিদের খবর দেন প্রতিবেশি ওই মহিলা। মৃতার স্বামী এবং পরিজনদের খবর দেওয়া হয়।মৃত মহিলার বাপের বাড়ি ঘাটাল থানার অন্তর্গত মনোহরপুকুরে। সেখানেও খবর দেওয়া হয়। বিষয়টি জানানো হয় চন্দ্রকোনা থানাতেও। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ওই বাড়িতে পৌঁছন চন্দ্রকোনা থানার ওসি, এসডিপিও অগ্নিশ্বর চৌধুরী-সহ পুলিশ কর্মীরা। তত ক্ষণে বাড়িতে ভিড় জমে গিয়েছে স্থানীয়দের। সেখান থেকে মৃতদেহ বার করে নিয়ে যান তাঁরা। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদেহের পাশ থেকে সিগারেট এবং মদের বোতলও পাওয়া গিয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, প্রতিবেশিদের সঙ্গে তেমন মিশতেন না ওই মহিলা। মেয়েকে নিয়ে একাই থাকতেন। তবে বাড়িতে অচেনা লোকের আনাগোনা ছিল। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের ধারণা, মহিলাকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট (Post Mortem Report) হাতে এলে খুনের কারণ পরিষ্কার ভাবে জানা সম্ভব হবে। তবে মহিলার গলায় আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে জানা গিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।