সোমনাথ দাস ও জয়দীপ হালদার, ঘাটাল ও সাগর : নিম্নচাপ হাজির হতে না হতেই তটস্থ পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল (Ghatal)। ঝুমি নদীর জলের তোড়ে একরাতে ভাঙল সাত-সাতটি বাঁশের সাঁকো! তার জেরে নদীতীরবর্তী প্রায় ৬০টি গ্রামের মধ্যে বিপর্যস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরের (Sagar) বঙ্কিমনগরে মুড়িগঙ্গার নদীবাঁধ ভেঙে জলমগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকা।


দুর্ভোগের চিত্র-


জলের তোড়ে ভেঙে গিয়েছে বাঁশের সাঁকো। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দুই পাড়। নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টি হতে না হতে দুর্ভোগের ছবি পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ঝুমি নদীর জল বেড়ে যাওয়ায়, স্রোতের তোড়ে এক রাতে ভেঙে গিয়েছে ৭টি বাঁশের সাঁকো। তার জেরে কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন নদীর দু’পাড়ের প্রায় ৬০টি গ্রাম। চরম সমস্যায় পড়েছেন সেখানকার হাজার হাজার বাসিন্দা। 


আরও পড়ুন ; রাত থেকে অবিরাম বৃষ্টির জের, ঝাড়গ্রামে বিপর্যস্ত জনজীবন


ঘাটালের মনসুকার এক বাসিন্দা বলেন, ঝুমি নদীর দু’পাড় বরাবর ১০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গ্রামগুলির মধ্যে যোগাযোগ রক্ষার মূল মাধ্যম ছিল এই সব বাঁশের সাঁকো। তা ভেঙে যাওয়ায়, ভরা বর্ষায় নৌকায় নদী পেরোতে হচ্ছে স্থানীয়দের। 


নিম্নচাপের মধ্যে বিপদের অশনি সঙ্কেত দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরেও। দফায় দফায় বৃষ্টি আর পূর্ণিমার ভরা কটালের মধ্যে বঙ্কিমনগরে প্রায় ১০০ মিটার জুড়ে ভেঙেছে মুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধ। জলমগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকা। সাগরের বঙ্কিমনগরের বাসিন্দা কাদরি হালদার বলেন, আমাদের ৩ দিন খাওয়া হয়নি। চারদিকে জল। জল ঢুকছে। বাচ্চাদের নিয়ে ওপরে চলে যাই। জল নামলে আবার ফিরে আসি। 


মালতী হালদার নামে অপর এক বাসিন্দা বলেন, আমাদের কিছু চাই না। বাঁধটা ঠিক করে সারাক।


এদিকে চাষের জমি নোনা জলের তলায় চলে যাওয়ায়, দিশেহারা কৃষকরা। সাগরের বিডিও সুদীপ্ত মণ্ডল বলছেন, ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষদের সরানো হয়েছে। নিম্নচাপ ও কটালের কারণে যে সব জায়গায় নদীবাঁধ ভেঙেছে, সেখানে সেচ দফতরের পক্ষ থেকে মেরামতি চলছে। সাগর ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব রকম সাহায্য করা হচ্ছে।


শেষ শ্রাবণে হাজির হওয়া নিম্নচাপ দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি পুষিয়ে দেবে কি না, তা নিয়ে যখন চর্চা চলছে। তার মধ্যেই জলযন্ত্রণার ছবি উঠে আসছে বিভিন্ন জেলা থেকে।