বিটন চক্রবর্তী, তমলুক: আগামী রবিবারই পুরভোট। তার আগে তমলুক পুরসভায় শেষ মুহূর্তের ভোট প্রচার তুঙ্গে। অধিকাংশ জায়গায় তৃণমূল বনাম বিজেপির লড়াই হলেও। তমলুকের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ছবিটা একটু অন্যরকম। এখানে তৃণমূল প্রার্থীর সঙ্গে মূল লড়াই ওই ওয়ার্ডেরই প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলরের।  


আসন্ন পুরভোটে তমলুকের চার নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী করেছে বিমল কুমার ভৌমিককে। টিকিট দেওয়া হয়নি ওই ওয়ার্ডের তিনবারের কাউন্সিলর ভানুপদ সাহাকে। তাঁতেই ক্ষুব্ধ ওই প্রবীণ তৃণমূল নেতা। টিকিট না পাওয়ায় দাঁড়িয়ে পড়েছেন নির্দল হয়ে।
দলীয় সূত্রে খবর, ভানুপদ সাহা দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর। কিন্তু তাঁর বয়স হয়েছে তাই তাঁর বদলে বেছে নেওয়া হয়েছে তুলনায় কম বয়সের প্রার্থী বিমল কুমার ভৌমিককে। কিন্তু সেই যুক্তি মানতে নারাজ ভানুপদ। নির্দল হয়ে দাঁড়ানোর পর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল তৃণমূলের তরফে। দফায় দফায় তাঁর সঙ্গে কথা বলে প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের জন্য বলা হয়। কিন্তু তাতে কানই দেননি প্রাক্তন ওই তৃণমূল কাউন্সিলর। একাধিক কথা বলার পরেও প্রার্থীপদ প্রত্যাহার না করায় শেষ পর্যন্ত তাঁকে বহিষ্কার করে তৃণমূল।


পরিবর্তনের পরে তমলুক পুরসভায় ঘাসফুলেরই দাপট ছিল। শেষ পুরভোটে ২০ আসনের পুরসভায় ১৬টি জিতেছিল তৃণমূল, একটি বিজেপি। বাকি তিনটিতে জয়ী হয়েছিলেন নির্দলরা। পরে তাঁরা তৃণমূলে যোগদান করেন। কিন্তু তৃণমূলের সেই একচেটিয়া দাপটে থাবা বসিয়েছে বিজেপি। একুশের বিধানসভা ভোটের নিরিখে তমলুক পুর এলাকায় অধিকাংশ ওয়ার্ডেই এগিয়েছিল পদ্মশিবির। 


সূত্রের খবর, সেই কারণেই এবার ভোটের আগে নির্দল-কাঁটায় স্বস্তিতে নেই তৃণমূল। যদিও অস্বস্তির কথা উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী বিমল কুমার ভৌমিক। তাঁর অভিযোগ, 'তাঁর সঙ্গে কোনও লোকই নেই। নিজেই প্রচার করছেন। বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন উনি।' তিনি আরও বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদ রয়েছে। প্রতিপক্ষ নিয়ে ভাবছি না। রাজ্য সরকারের অজস্র প্রকল্পের উপকার পেয়েছেন বাসিন্দারা। তৃণমূলের সঙ্গেই রয়েছেন তাঁরা।' 
কোমর বেঁধে পাল্টা প্রচারে নেমেছেন ভানুপদ সাহাও। ডেমো ইভিএম এবং অনুগামীদের নিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। কোন বোতামে ভোট দিতে হবে তাও বলছেন ভোটারদের। মাঝেমধ্যে অবশ্য নিজেকে তৃণমূল প্রার্থীও বলে ফেলছেন। পাশের জন ভুল ধরিয়ে দিতেই, তাঁর সহাস্য জবাব, 'বহুদিনের অভ্যাস, তাই মুখ ফসকে যাচ্ছে।'


নির্দলের সঙ্গে বিজেপির যোগসাজশের অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন ওই ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী শঙ্কর গোরাই। তবে পুরভোটের আগে পদ্মশিবিরকে তেমন একটা প্রচারে দেখা যাচ্ছে না বলেই দাবি স্থানীয়দের। 


আরও পড়ুন: ভোট প্রচারে বেরিয়ে 'টাকা বিলি'! অভিযুক্ত ইংরেজবাজার পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী