কলকাতা: বাংলা ও বাঙালির খাবারে দইয়ের আনাগোনা বহু পুরনো। বহুবার দইয়ের বিবরণ উঠে এসেছে বাংলা কবিতা, গল্পে।


''দাদখানি চাল, মুসুরির ডাল,চিনি-পাতা দৈ,
দু'টা পাকা বেল, সরিষার তেল, ডিমভরা কৈ''
--কাজের ছেলে, যোগীন্দ্রনাথ সরকার


পুরনো দিনের মাটির ভাঁড়ে পাতা দই (curd) থেকে হালফিলের ফ্লেভার্ড ইয়োগার্ট (yoghurt)। নামে-স্বাদে বদল হলেও উপকারিতা কমবেশি একই। তবে অনুষ্ঠান বাড়ির মিষ্টি দই নয়, হজম ঠিক করতে টকদই বেশি কার্যকরী। স্বাদে তো বটেই, হজমেও সাহায্য করে দই।


কিন্তু ভাল জিনিসও সবসময় উপকার করে না। যদি ভুল সময়ে খাওয়া হয়ে থাকে। টকদইও অনেকটা তেমনই। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং পুষ্টিবিদেরা জানাচ্ছেন, রাতে শোওয়ার আগে টকদই খাওয়া মোটেই ভাল নয়। তাতে হজমের গুরুতর সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে যাদের হজমশক্তি তুলনায় কম। যাঁদের অম্বলের রোগ রয়েছে, যেমন অ্যাসিডিটি (acidity), অ্যাসিড রিফ্লাক্স (acid reflux)। অথবা যাদের বদহজমের (indigestion) সমস্যা রয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রে রাতে ঘুমনোর আগে দই খাওয়া ক্ষতিকারক।


কিন্তু কেন?   
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, রাতে ঘুমনোর আগে মানবদেহের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া তুলনায় অনেক ধীরে হয়। সেই কারণে ওই রোগীদের হজমপ্রক্রিয়া (digestion) ধাক্কা খায়। 


রাতে দই খেলে কী ক্ষতি?
রাতে পাতে দই থাকলে বাড়তে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য।
ঠান্ডা লাগার সমস্যাও হতে পারে।
যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের রাতে দই খাওয়া উচিত নয়।
গলায় ব্যথা থাকলে, টনসিল সংক্রমণের সমস্যা থাকলেও দই খেতে বারণ করা হয়।
শরীরে ব্যাথা বাড়তে পারে রোজ রাতে দই খেলে।


বারণ রয়েছে আয়ুর্বেদেও
প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও রাতে দই খাওয়ার নিষেধ রয়েছে। রাতে তুলনায় ঠান্ডা থাকে পরিবেশ। ফলে রাতে দই খেলে ঠান্ডা লেগে শরীরে কফ বৃদ্ধি হয় বলে জানাচ্ছে আয়ুর্বেদ শাস্ত্র। তাতে আরও বলা রয়েছে, যেহেুতু ব্যাকটেরিয়ায় মাধ্যমে দুধ থেকে দই তৈরি হয়। তাই সেই ধরনের খাদ্য রাতে খাওয়া শরীরের পক্ষে অনুচিত। যাঁরা বাতের সমস্যা, আর্থারাইটিসের মতো রোগে ভুগছেন তাঁদের জন্যও রাতে দই খাওয়া উচিত নয়। 


ডিসক্লেইমার : কপিতে উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপদ্ধতি/ডায়েট ফলো করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ / চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন ও সেইমতো নিয়ম মেনে চলুন।


আরও পড়ুন: ডাল, ডিমের সাদা, দই, আর কী কী খাবেন কোভিডের পর ভরপুর এনার্জি ফিরে পেতে?