অমিত জানা, পশ্চিম মেদিনীপুর: চোর সন্দেহে গণপ্রহারের শিকার হলেন তৃণমূল নেতা। পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ে তৃণমূল নেতাকে গাছে বেঁধে মারধরের অভিযোগ উঠল। মারধরের অভিযোগে ৫ জন বিজেপি কর্মী-সমর্থককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মারধরের অভিযোগ কার্যত স্বীকার করেছে বিজেপি। যদিও চুরির অভিযোগে অনড় পদ্মশিবির।
গত বছরেই রেলে চাকরির নামে ৫ লক্ষ টাকা হাতানোর অভিযোগে, ডেবরায় এক তৃণমূল নেতাকে গাছে বেঁধে পেটানো হয়েছিল। এই বছরেও সেই একই ঘটনা। গৃহস্থ বাড়িতে আলমারি ভেঙে টাকা চুরির অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বুথ সভাপতির বিরুদ্ধে। আর সেই অভিযোগে তৃণমূলের বুথ সভাপতিকে গাছে বেঁধে মারধরের অভিযোগ উঠল কয়েকজন বিজেপি কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের বুথ সভাপতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিজেপি সূত্রে দাবি, ধৃত ৫ জনই তাঁদের কর্মী সমর্থক।
কী অভিযোগ:
বেলদার মনিরাজ গ্রামের বাসিন্দা মদন দাস নারায়ণগড় ব্লকের ১৩ নম্বর বাখরাবাদ অঞ্চলের তেগেড়িয়া বুথের তৃণমূল সভাপতি। তাঁর দাবি, রবিবার রাতে একটি নেউলকে দেখে তার পিছনে দৌড়চ্ছিলেন তিনি। সেই সময় কয়েকজন বিজেপি কর্মী চোর চোর চিৎকার করে তাঁকে ধরে ফেলে। তারপরে জোর করে গাছে বেঁধে ফেলে বেধড়ক মরাধর করে অভিযোগ করেছেন ওই তৃণমূল নেতা। চোখে আঘাতও রয়েছে তাঁর। মদন দাস বলেন, 'আমাকে বিজেপির লোকেরা মেরেছে। নেউল দেখে ফলো করছিলাম। ওরা চোর চোর করে গাছে বেঁধে মারল। তেগেড়িয়ার বুথ সভাপতি আমি। বিজেপির ক্ষোভ আছে, আমি টিএমসি করি বলে।'
বিজেপির অভিযোগ:
স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের পাল্টা দাবি, একটি বাড়িতে চুরি করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে যান তৃণমূলের বুথ সভাপতি। তার জেরেই তাঁকে মারধর করা হয়। নারায়ণগড় মধ্যম মণ্ডলের বিজেপি সভাপতি সমীরণ বারুই বলেন, 'গ্রামের মানুষ খাওয়াদাওয়ার পর যখন ফিরছিলেন তখন তৃণমূলের বুথ সভাপতি ওইখানকার একটা বাড়িতে টাকা পয়সা ভেঙে চুরি করেন। গ্রামবাসীরা তাকে ধরে ফেলেন। বেঁধে মারধর করা হয়। তাঁদের অধিকাংশই আমাদের কর্মী সমর্থক। পুলিশ গিয়ে তাঁদের গ্রেফতার করে আনে।'
বিতর্ক বাড়িয়েছে আরও একটি ঘটনা। যাঁর বাড়িতে চুরির অভিযোগ উঠেছে, সেই বাড়ির গৃহকর্তাকেও গ্রেফতার করেছে বেলদা থানার পুলিশ। অভিযোগকারী শিবাণী দাস বলেন, 'আমার বাড়িতে চুরি হয়েছে। মদন দাস টাকা চুরি করেছে।' অভিযোগ করা হয়েছে কিনা সেই প্রশ্ন করায় তিনি বলেন, 'আমার স্বামীকেই তো নিয়ে গিয়েছে পুলিশ গতকাল রাতে। কমপ্লেনটা কে করবে?' কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগ রয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করাতে তিনি জানান, তাঁর স্বামী বছর দুয়েক আগে বিজেপি করত। এখন করে না।
মারধরের ঘটনা এবং চুরির অভিযোগ ঘিরে এখন সরগরম মনিরাজ গ্রাম।
আরও পড়ুন: 'ঢুকবেন না নেতা-মন্ত্রীরা', মালদার গ্রামে দেওয়াল লিখলেন বাসিন্দারা