অমিত জানা, পশ্চিম মেদিনীপুর: দলবদল নিয়ে এবার বিস্ফোরক দলেরই বিধায়ক। দলের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিলেন দাঁতনের তৃণমূল (TMC MLA) বিধায়ক। বিধায়কের বক্তব্যে কার্যত স্পষ্ট তৃণমূলে আদি-নব্যের লড়াই।
সম্প্রতি দাঁতনের চকইসমাইলপুর এলাকায় তৃণমূলের ব্লক সভাপতি প্রতুল দাসের হাত ধরে বেশ কয়েকজন বিজেপি (BJP) ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। গতকাল সেই চকইসমাইলপুর এলাকাতেই একটি সভা করেছিলেন দাঁতনের তৃণমূল বিধায়ক বিক্রমচন্দ্র প্রধান। সেই সভা থেকেই নাম না করে দলের ব্লক সভাপতিকে কটাক্ষ করেন তিনি।
কী বলেছেন বিধায়ক:
দাঁতনের তৃণমূল বিধায়ক বিক্রমচন্দ্র প্রধান বলেন, 'যাঁরা আজকে ৯৮ সাল থেকে আমাদের সঙ্গে পায়ে পা মিলিয়ে হাতে হাত মিলিয়ে সারা চক ইসমাইলপুর অঞ্চল ঘুরেছেন দলকে সংগঠিত করার জন্য। দলকে সেই জায়গায় নিয়ে গেছেন। ২০১৯-এ যারা বিজেপি করছিল, ২০২১-এ যারা বিজেপি করছিল, ২০২৩-এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে যারা বিজেপি করছিল আজকে তাদের হাতে যদি কেউ কেউ পতাকা গুঁজে দেয়, আমি মনে করি সেটা অশুভ শক্তির হাতে এই পতাকা তুলে দেওয়া হচ্ছে। সেই অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে হবে।'
যদিও এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি প্রতুল দাস দাবি করেন, 'আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাইডলাইন মেনে কাজ করছি। যে বলেছে সে ভুল। এখানে কোনও অশুভ শক্তি নেই।' তাহলে অন্য দল থেকে তৃণমূলে যোগদান নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে মতভেদ কি স্পষ্ট হল? উঠছে প্রশ্ন।
এই ঘটনায় তৃণমূলের দিকে কটাক্ষ ছুড়েছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির মেদিনীপুর (Medinipur) সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক উমা বিশ্বাসের কটাক্ষ, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জন্যই তৃণমূলে এমন আকচাআকচি হয়েছে। শাসকদলের মালিকানা নিয়ে গন্ডগোল বলে খোঁচা বিজেপির।
পঞ্চায়েত ভোটের সময় তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে একাধিকবার বলা হয়েছিল। যাঁরা অন্য দলে থেকে লড়ছেন বা যাঁরা নির্দল হয়ে দাঁড়াচ্ছেন, ভোটের পর তাঁদের দলে ফেরত নেওয়া হবে না। যদিও পঞ্চায়েত ভোটের ফল বেরনোর পরে তৃণমূলে আসতে দেখা গিয়েছে একাধিক নির্দল জয়ী প্রার্থী, বিরোধী দলের জয়ী প্রার্থীদের।
সম্প্রতি, তমলুকে বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে প্রকাশ্যে এসে পড়েছিল তৃণমূল বিধায়ক এবং কাউন্সিলর ও যুব তৃণমূল নেতার সংঘাত। মুর্শিদাবাদেও আলাদা করে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান করতে দেখা গিয়েছে বিধায়ক ও ব্লক সভাপতিকে। এবার দাঁতনে খোদ বিধায়কের মন্তব্য উসকে দিল তৃণমূলের আদি-নব্যের দ্বন্দ্ব।