নয়াদিল্লি : ‘বন্দে মাতরম’-এর উপর লোকসভায় আলোচনা শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই বিষয়ে সোমবার ১০ ঘণ্টা বরাদ্দ রাখা হয়েছে আলোচনার জন্য। ভারতের ইতিহাস, স্বাধীনতা আন্দোলন, তাতে বাংলার অবদান নিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ‘বন্দে মাতরম’-এর রচয়িতা বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে ‘বঙ্কিমদা’ বলে উল্লেখ করেন। এরপরই তা নিয়ে তীব্র আপত্তি জানান তৃণমূল সাংসদরা। মোদির কথার মাঝেই আপত্তি তোলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তিনি সরাসরি বলেন, ‘বঙ্কিমদা বলছেন কেন? অন্তত বাবু বলুন’। কয়েকবার বলার পর সৌগত রায়ের কথা শুনে থামেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, “আমি আপনাকে দাদা বলে ডাকতে পারি, তাই না? নাকি এতেও আপনার আপত্তি আছে?” কিছুটা মজা করার সুরেই জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী। সৌগত রায়কে বলেন, তিনি তাঁর ভাবনার সম্মান করেন। প্রধানমন্ত্রী তারপর ‘বঙ্কিমবাবু’ বলে উল্লেখ করেন। এই ‘বঙ্কিমদা’ প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে আক্রমণ শানান সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারও।
প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ১৯০৫ সালে যখন ব্রিটিশরা বাংলা ভাগ করার কথা ঘোষণা করে, তখন বন্দে মাতরম এক ঐক্যের মন্ত্রে পরিণত হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, "ব্রিটিশরা বুঝতে পেরেছিল যে ১৮৫৭ সালের পর, এখানে থাকা তাদের জন্য কঠিন... তারা জানত ভারত ভাগ না করা পর্যন্ত , এখানে শাসন কায়েম রাখা সম্ভব নয়... তারা এই জন্যই বাংলাকে তাদের পরীক্ষাগারে পরিণত করেছিল... বাংলার বৌদ্ধিক শক্তি সেই সময় সমগ্র দেশকে পরিচালিত এবং অনুপ্রাণিত করেছিল। ব্রিটিশরা ভালো করেই বুঝতে পেরেছিল যে বাংলার শক্তিই ভারতের শক্তির কেন্দ্রবিন্দু। এই কারণেই তারা প্রথমে বাংলাকে বিভক্ত করার জন্য কাজ করেছিল। তারা বিশ্বাস করত যে যদি বাংলা ভেঙে যায়, তাহলে জাতিও ভেঙে যাবে," বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, "১৯০৫ সালে যখন ব্রিটিশরা বাংলা ভাগের সিদ্ধান্ত নেয়, তখন বন্দে মাতরম পাথরের মতো দাঁড়িয়ে ছিল। এই স্লোগান ওঠে বাংলার অলি-গলি থেকে। ব্রিটিশরা বঙ্গভঙ্গের মাধ্যমে ভারতকে দুর্বল করার পথ বেছে নিয়েছিল, কিন্তু বন্দে মাতরম ব্রিটিশদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ এবং জাতির জন্য শক্তি হয়ে ওঠে"।