অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে সংসদে 'বঙ্কিমদা' সম্বোধন করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। আজ কলকাতা পুরসভায় পেশ নিন্দা প্রস্তাব। প্রস্তাব পেশের পর বিজেপিকে আক্রমণ মেয়র ফিরহাদ হাকিমের। পাল্টা ফিরহাদের 'মিনি পাকিস্তান' বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে আক্রমণ বিজেপির।
আরও পড়ুন, খসড়া তালিকায় কারও নাম থাকলেও, চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় তা বাদ হয়ে যেতে পারে ?
আজকে কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশন ছিল। সেখানে অরূপ চক্রবর্তী তিনি, একটি নিন্দা প্রস্তাব আনেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে যেভাবে অপমান করা হয়েছে, সেই জন্য তিনি একটি নিন্দা প্রস্তাব আনেন। এবং সেই প্রস্তাব নিয়েই, বিভিন্ন জন আলোচনা করেন। এবং সবশেষে বলতে ওঠেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি যখন বলছিলেন, সেখান থেকে ক্রমশ , বিহারে নীতিশ কুমার যে কাণ্ডটি ঘটিয়েছেন, সেই দিকে তিনি উল্লেখ করতে শুরু করেন। এই সময় বিজেপির যে বেঞ্চ রয়েছে, সেখান থেকে কটাক্ষ করা হয়, মিনি পাকিস্তানের কথা তুলে ধরা হয়। এরপরেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলতে শুরু করেন, এক্ষেত্রে তিনি কিন্তু, আদ্যপান্ত ভারতীয়। এবং তিনি পাকিস্তানের বিরোধী। এই কথা তিনি বলতে শুরু করেন। একদিকে সজল ঘোষের কটাক্ষ, অন্যদিকে পাল্টা মেয়র। বিভিন্নদিকে, কাউন্সিলরদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এবং শেষ পর্যন্ত এই উত্তেজনা প্রশমনের পরে, চেয়ারপার্সন মালা রায় একটি গাইতে অনুরোধ করেন।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, 'আচ্ছা পাকিস্তানি ইস্যুতে মেয়র উত্তেজিত কতদিন ধরে হবেন ?! কিছুই বলিনি, আপনারা দেখেছেন। আমি বলেছি, উনি কাউকে একজনকে পাকিস্তানের সমর্থক বলছিলেন। উনি নিজেই মিনি পাকিস্তান বলেছিলেন। ইনি আজকে চিৎকার করলেন, যে দেখাতে পারলে উনি রিজাইন করবেন। আমি নিশ্চয়ই দেখিয়ে দেব। সেটা হচ্ছে, মিনি পাকিস্তান শব্দটা উনি উচ্চারণ করেছিলেন, এই কর্পোরেশনের মেয়র, তিনি কী করে বলতে পারেন, আর্ধেক বাংলার মানুষ উর্দুতে কথা বলবেন? তিনি কী করে দাওয়াতে ইসলাম দিয়ে বলতে পারেন যে হিন্দুগর্ভে জন্মানো সেটা দুর্ভাগ্য়ের বিষয়।'
পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছোয়, যে তৃণমূল কাউন্সলির মহেশ শর্মার মন্তব্য়ে অসন্তুষ্ট হয়ে নিজের আসন ছেড়ে তাঁর দিকে তেড়ে যান বিজেপি কাউন্সিলর মীনাদেবী পুরোহিত। কোনওমতে তাঁকে সামাল দেন সজল ঘোষ। অন্য়দিকে, মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে শান্ত করতে এগিয়ে আসেন দেবাশিস কুমার সহ তৃণমূল কাউন্সিলরদের একাংশ। সজল ঘোষ আরও বলেন,'বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্য়ায়কে কেউ যদি বলেন দাদা, কাকা নিশ্চয়ই আমরা বাঙালি হিসেবে তাতে খুব একটা সন্তুষ্ট হই না। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে, যিনি বলছেন তিনি বাংলার মানুষ নয়। বাঙালির প্রত্য়েককে আমরা সম্মান করি দাদা বলে। মাস্টারদাও দাদা, সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায়ও দাদা। কিন্তু এটাও দিনশেষে বিশ্বাস করি, যে বাঙালির জন্য় খুব একা মঙ্গলজনক নয় কথাটা। এটা ইচ্ছাকৃত নয়। কিন্তু ইচ্ছাকৃত তো এটা যিনি বন্দে মাতারম গানটা নিজে গাইতে পারেন না, মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়।'