রুমা পাল, বিজেন্দ্র সিংহ, কলকাতা: ৪ নভেম্বর থেকে, পশ্চিমবঙ্গে শুরু হয়েছিল SIR প্রক্রিয়া। প্রায় দেড় মাস পর, মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করল নির্বাচন কমিশন। তাতে জায়গা পেলেন ৭ কোটি ৮ লক্ষ ১৬ হাজার ৬৩১ জন। বাদ গেল ৫৮ লক্ষের বেশি ভোটারের নাম। আর ক'মাস পরেই বিধানসভা ভোটের লাইনে দাঁড়াবে রাজ্যবাসী। তার আগে, SIR নিয়ে গত কয়েক মাসে রাজ্য রাজনীতিতে ঝড় বয়ে যাচ্ছে! কার নাম থাকবে! কে বাদ যাবে!কে বৈধ ভোটার! কে অনুপ্রবেশকারী! এসব নিয়ে চাপানউতোরের মধ্যেই অপেক্ষার প্রহর গুনছিল রাজ্যবাসী। এই অবস্থায় মঙ্গলবার, খসড়া ভোটার তালিকা এবং যাদের নাম বাদ পড়ল, সেই তালিকা পৃথকভাবে প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের প্রকাশ করা তথ্য অনুযায়ী, খসড়া ভোটার তালিকা থেকে বাদ গেছে ৫৮ লক্ষের বেশি নাম
নির্বাচন কমিশনের প্রকাশ করা তথ্য অনুযায়ী, খসড়া ভোটার তালিকা থেকে বাদ গেছে ৫৮ লক্ষের বেশি নাম। যার মধ্য়ে মৃত ভোটার ২৪ লক্ষ ১৬ হাজার ৮৫২। খোঁজ পাওয়া যায়নি এরকম ভোটারের সংখ্যা ১২ লক্ষ ২০ হাজার ৩৮ জন। ১৯ লক্ষ ৮৮ হাজার ৭৬ জন ভোটার অন্য়ত্র স্থানান্তরিত হয়েছেন। ১ লক্ষ ৩৮ হাজার ৩২৮ জন ডুপ্লিকেট ভোটারের নাম বাদ গেছে। অন্যান্য কারণে বাদ পড়া নামের সংখ্যা ৫৭ হাজার ৬০৪।
খসড়া তালিকায় কারও নাম থাকলেও, চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় তা বাদ হয়ে যেতে পারে?
সব মিলিয়ে এনুমারেশন পর্বের পর বাদ যাওয়া ভোটারের মোট সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৫৮ লক্ষ ২০ হাজার ৮৯৮-এ। রাজনৈতিক এই তরজার মধ্যেই প্রশ্ন হল, তাহলে কি খসড়া তালিকায় আপনার নাম থাকা মানেই চূড়ান্ত তালিকাতেও আপনার নাম থাকবে, এমনটা নয়? খসড়া তালিকায় কারও নাম থাকলেও, চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় তা বাদ হয়ে যেতে পারে? নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট জানিয়েছে, এবার শুরু হবে খসড়া ভোটার তালিকার চুলচেরা বিশ্লেষণ। শুরু হবে হিয়ারিংয়ের পর্ব! যে খসড়া ভোটার তালিকা কমিশন প্রকাশ করেছে তা ম্যাপিং হয়েছে ৩ ভাগে।প্রোজেনি ম্যাপিং,সেল্ফ ম্যাপিং এবং নো ম্যাপিং।
কাদের শুনানিতে ডাকা হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন কমিশন সূত্রে দাবি, নো ম্যাপিং অর্থাৎ যেসব ভোটার তার নিজের বা নিকটাত্মীয় কারও নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকা থেকে ম্যাচ করাতে পারেননি, এরকম প্রায় ৩০ লক্ষ ভোটার রয়েছে। তাদের সকলকেই হিয়ারিংয়ে ডাকা হবে। কমিশন সূত্রে দাবি, ১ কোটি ৬৭ লক্ষ ভোটারের দেওয়া তথ্যে অসঙ্গতি রয়েছে। তবে তাঁদের মধ্যে কাদের শুনানিতে ডাকা হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন। প্রোজেনি ম্যাপিং ও সেল্ফ ম্যাপিংয়ে নাম থাকা ভোটারদের হিয়ারিংয়ে ডাকার সম্ভাবনা কম রয়েছে বলেই সূত্রের খবর। কবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে ?
কাকে হিয়ারিংয়ে ডাকা হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেবেন ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার বা ERO। কমিশন সূত্রে খবর, সংখ্যা বেশি থাকায় এবার ERO-দের পাশাপাশি AERO-রাও হিয়ারিং করবেন। সংশ্লিষ্ট ভোটারকে শুনানির নোটিস তাঁর বাড়িতে গিয়ে পৌঁছে দেবেন BLO। ৭ দিন পর থেকে শুরু হবে শুনানি। মঙ্গলবার থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত খসড়া ভোটার তালিকা সংক্রান্ত যাবতীয় অভিযোগ জানানো যাবে। যেগুলো খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ নেবে নির্বাচন কমিশন। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ভোটারকে ডাকা হবে শুনানিতে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত খসড়া ভোটার তালিকা সংক্রান্ত শুনানি এবং ভেরিফিকেশন চলবে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি।