বোলপুর: উপাসনা গৃহে বসে দুর্গাপুজো ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জের। সূত্রের খবর, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর (Bidyut Chakraborty) ওই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এবার বিশ্বভারতীর (Visva Bharati) কাছে রিপোর্ট চাইল প্রধানমন্ত্রীর দফতর (PMO)। বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, কেন এবং কোন পরিপ্রেক্ষিতে এই সব মন্তব্য সে সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে চাওয়া হয়েছে।


প্রধানমন্ত্রীর দফতরে অভিযোগ জানায় শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট


গত ২২ ফেব্রুয়ারি উপাসনা গৃহে বসে বসন্তোৎসব বন্ধের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে দুর্গাপুজো-সহ বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। সূত্রের খবর, এর প্রেক্ষিতে উপাচার্যের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে অভিযোগ জানায় শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট। যদিও প্রধানমন্ত্রীর দফতরের রিপোর্ট তলব নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়।


বসন্তোৎসবের ব্যাখ্যা দিতে গিয়েই বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন বিদ্যুৎ। তাঁর যুক্তি ছিল, ইংরেজদের পদলেহন করতেই দুর্গাপুজোর সূচনা হয়। রাজাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হত যে, কে কত জন ইংরেজকে পুজোর অনুষ্ঠানে নিয়ে আসতে পারবেন। দুর্গাপুজোর সময় বিভিন্ন ধরনের পানীয় পান করার সুযোগ ছিল। পরবর্তীতে দুর্গাপুজো ধর্মীয় অনুষ্ঠানের রূপ নেয়। 


আরও পড়ুন: Mohammed Salim: তৃণমূলের বিকল্প হওয়ার মতো জায়গায় এখনও নেই CPM, মেনে নিলেন সেলিম


বিদ্যুতের ওই মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হতে সময় লাগেনি। সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দফতের অভিযোগ জমা পড়ে। চিঠি লিখে অভিযোগ জানান শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার। তার প্রেক্ষিতেই রিপোর্ট চেয়ে পাঠাল প্রধানমন্ত্রীর দফতর। উপাচার্যের মন্তব্য বিশদে জানাতে বলা হল শান্তিকেতন ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষকে।


রাজ্য সরকারের সঙ্গেও সরাসরি সংঘাতে জড়িয়েছেন বিদ্যুৎ


বিশ্বভারতীয় দায়িত্ব হাতে পাওয়া ইস্তক লাগাতার বিতর্কে নাম জড়িয়েছে বিদ্যুতের। রাজ্য সরকারের সঙ্গেও সরাসরি সংঘাতে জড়িয়েছেন তিনি। আবার জমি বিতর্কে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সঙ্গে বিবাদ গড়িয়েছে আইন পর্যন্ত। নোবেলজয়ীকে নিয়েও কটাক্ষ শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে। শুধু তাই নয় অমর্ত্যের পাশে দাঁড়ানোয় রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি বিদ্যুৎ।


এর আগেও, একাধিক বার বিদ্যুতের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিশ্বভারতীর অধ্যাপক, কর্মী থেকে পড়ুয়ারা। পৌষমেলা বিতর্কেও বিতর্কে পড়েন তিনি। একের পর এক ঘটনায় উপাচার্যের সঙ্গে গেরুয়া শিবিরের দহরম মহরম নিয়ে বার বার অভিযোগ তুলে সরব হয় রাজ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাহানির অভিযোগ তোলা হয়।  দুর্গাপুজো নিয়ে মন্তব্যের জেরে এ বার কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের নজর পড়ল তাঁর উপর।