কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: রাজ-রাজাদের ঐতিহ্য মেনেই দেবী সর্বমঙ্গলা মন্দিরে পুজো দিয়েই বছর শুরু করেন বর্ধমানবাসী। সেই সঙ্গে ব্যবসায়ীরাও হালখাতার পুজোয় মেতে উঠেন। নববর্ষ উপলক্ষ্যে সর্বমঙ্গলা মন্দিরে ভক্ত সমাবেশে ফলে তিল ধারণের জায়গা নেই।


বর্ধমানে অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা। মা সর্বমঙ্গলাকে রাঢ় বঙ্গের দেবী বলা হয়। যে কোনও শুভ কাজ শুরুর আগে মা সর্বমঙ্গলার মন্দিরে পুজো দেন বর্ধমানের বাসিন্দারা। তাই পয়লা বৈশাখ  উপলক্ষ্যে সকাল থেকেই মন্দিরে ভক্তদের ঢল নামে। 


সারা বছর পরিবার পরিজনের মঙ্গল কামনায় মন্দিরে পুজো দেন ভক্তরা। সেজন্য ভোর থেকেই দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষায় থাকেন অগণিত ভক্ত। হাজারে হাজারে ব্যবসায়ী আসেন হালখাতা পুজো করার জন্য। মন্দিরের নাটমঞ্চে তিল ধারণের জায়গা নেই। লাল খাতার ওপর সিঁদুর দিয়ে আঁকা হয় স্বস্তিক চিহ্ন। সিঁদুর গুলে লাগিয়ে দেওয়া হয় এক টাকার কয়েন। আনা হয় লক্ষ্মী গণেশের মূর্তি। পুজো করিয়ে সেই মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে।এই রীতিই রাজ আমল থেকে চলে আসছে।এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি।                                                                                                                                           


আরও পড়ুন, পয়লা বৈশাখে মা-কে প্রণাম করেই বছর শুরুর বাসনা, মন্দিরে মন্দিরে ভক্তদের ভিড়


তবে সবারই প্রার্থনা মায়ের কাছে ব্যবসা বাণিজ্যে শ্রীবৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবার ও সকলের মঙ্গল যেন করেন মা সর্বমঙ্গলা। বাড়তি ভিড় সামাল দিতে ও যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে মোতায়েন করা হয় স্বেচ্ছাসেবক ও পুলিশ। 


১৭০২ সালে স্বপ্নাদেশ পেয়ে চুনুরিদের কাছে থাকা বাঁকা নদের পার থেকে উদ্ধার করে দেবী সর্বমঙ্গলাকে বর্ধমানের মহারাজ কীর্তিচাঁদ রাজবাড়ির মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন। তখন থেকেই বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মা সর্বমঙ্গলা। মন্দিরের প্রবেশ পথে তিনটি স্তরে পোড়া মাটির মূর্তি রয়েছে। মূল মন্দিরের সামনে রয়েছে নাট মন্দির। দক্ষিণ দিকের প্রবেশ পথ দিয়ে ঢুকলে দেখা যায় দু ধারে দুটো শিব মন্দির।