ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: শীত মানেই কলকাতার রাস্তায় রাস্তায় মানুষের ঢল। শীতের ছুটিতে ঘুরতে যাওয়া প্রবণতা বাঙালির মধ্যে বেশ বেশিই। তবে শীতকাল মানেই যে সব ভিড় কলকাতামুখী, এমনটা কিন্তু নয়। শীতকালে অনেকেরই গন্তব্য থাকে বীরভূম। আর এই সময়ে বীরভূম মানেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলা। দূর দূরান্ত থেকে মানুষ এসে ভিড় জমান এই মেলায়। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই মেলা বুকে করে বয়ে নিয়ে চলেছে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ইতিহাস। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই মেলায় অনেক বদল এসেছে। এবার ও নিয়ম মেনেই আয়োজন করা হয়েছে পৌষ মেলার। 

Continues below advertisement

মঙ্গলবার অর্থাৎ আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে পৌষমেলা। বেশ কিছু নিয়ম মেনে পৌষমেলা করতে বলেছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। সে সব নিয়ম ঠিক মতো মানা হচ্ছে কি না, মাঠে গিয়ে রবিবার তা খতিয়ে দেখেন বিশ্বভারতীর ও জেলার পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকেরা। পরিদর্শক দলে ছিলেন বিশ্বভারতীর দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অমিত হাজরা, বোলপুরের এসডিপিও রিকি আগরওয়াল, বিশ্বভারতীর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আধিকারিক, শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের প্রতিনিধি ও মেলা কমিটির সদস্যেরা।

মঙ্গলবার অর্থাৎ ৭ই পৌষ থেকে শুরু হচ্ছে পৌষমেলা। এ বার মেলা ছ'দিনের। এর মধ্যেই পর্যটকের ভিড় শুরু হয়ে গিয়েছে শান্তিনিকেতন। গত সোমবার থেকে অনলাইনে স্টল বণ্টনের কাজ শুরু হয়। এ বারও কিছু অনিয়মের অভিযোগ মোটের উপর সুষ্ঠু ভাবে কাজ শেষ হয়েছে বলে বিশ্বভারতীর দাবি। জোর কদমে চলছে মেলার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার থেকেই মাঠে বসানো হয়েছে প্রায় ৩০০টি নজর-ক্যামেরা। স্থায়ী কয়েকটি নজর ক্যামেরা এমনিতেই মাঠে রয়েছে। যানজট এড়াতে এ বারই রেড, ইয়োলো ও গ্রিন জোন রাখা হচ্ছে। মেলা প্রাঙ্গণে খোলা থাকবে পুলিশের কন্ট্রোল রুম। সেখান থেকেই সমস্ত কিছু নজরদারি করা হবে। মেলার ভিতরে ও মেলার বাইরে থাকছে একাধিক পুলিশ সহায়তা কেন্দ্র। রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি বিশ্বভারতীর বেশ কয়েকজন পড়ুয়া মেলায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করবেন বলেও জানা গিয়েছে।

Continues below advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মেলা প্রাঙ্গণে ১০টি ওয়াচ টাওয়ার তৈরি হয়েছে। পাঁচটি ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমেও নজরদারি চালানো হবে। নিরাপত্তায় সিভিককর্মী, পুরুষ ও মহিলা পুলিশকর্মী, অফিসার মিলিয়ে প্রায় ২,৫০০ জনকে মোতায়েন করা হবে। পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ডিএসপি, এসডিপিও পদমর্যাদার ১৫-১৬ জন অফিসার নজরদারি চালাবেন। কেপমারি, ইভটিজিং রুখতে পুলিশের একাধিক দল রাখা হচ্ছে। মেলায় যান নিয়ন্ত্রণের জন্য মেলা ঢোকার রাস্তায় একাধিক ড্রপ গেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিবেশ দূষণের কথা মাথায় রেখে বিশ্বভারতীর শৌচাগার-সহ বেশ কয়েকটি বায়ো-টয়লেটও বসানো হচ্ছে। এ ছাড়াও মেলায় জল, বিদ্যুৎ ও জরুরি পরিষেবার ব্যবস্থা থাকছে।