সৌভিক মজুমদার,  কলকাতা: ২০১৪ সালের প্রাথমিকে টেট-দুর্নীতির মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চেও ক্ষোভের মুখে পড়ল পর্ষদ। ‘এটা কি ক্লাস টেস্ট?’ ‘আপনাদের কি মনে হয় না, যে তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে?’ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ভূমিকা নিয়ে এমনই কড়া প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি।



' এটা কি ক্লাস টেস্ট ? ' 
২০১৪ সালের প্রাথমিকে টেট-দুর্নীতির মামলায়, CBI তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি লপিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে যায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। কিন্তু, মঙ্গলবার 


২৭৩ জনকে বাড়তি ১ নম্বর দেওয়া নিয়ে কড়া প্রশ্ন ছুড়ে দিল সেই বেঞ্চও। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার বলেন, দিনের শেষে এটা বলা যায় যে, পর্ষদ কোনও ক্লাস টিচার নয় এবং তারা কোনও ক্লাস টেস্ট নিচ্ছে না। এটা একটা নিয়োগ প্রক্রিয়া। আপনার মনে হল, কিছু ব্যক্তিকে আপনি ১ নম্বর করে দেবেন, এবং দিয়েও দিলেন! 


এরপর বিচারপতি আরও বলেন,  ' এটা কি ক্লাস টেস্ট, যে আপনি খেয়াল করলেন, কিছু ছাত্রকে ১ নম্বর দেওয়া হয়নি, তারপর আপনি বাকিদেরও বাড়তি নম্বর দিয়ে শান্তি রক্ষা করলেন? আপনাদের কি মনে হয় না, যে তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে? কে তদন্ত করবে সেটা আলোচনার বিষয়বস্তু হতে পারে। আপনাদের আচরণ অপরাধমূলক ছিল কিনা, সেটা পরের কথা। কোনও না কোনও সংস্থাকে দিয়ে অনুসন্ধান করতেই হবে। আপনারা নিজেরাই নিজেদের অনিয়মের তদন্ত করবেন, সেটা তো হতে পারেনা। ' 

আপনারা আদালতে জানিয়েছিলেন?
বিচারপতি লপিতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন,২০১৮ সালে যখন ৬টি প্রশ্ন ভুলের অভিযোগে মামলা হয়, তখন কি আপনারা আদালতে জানিয়েছিলেন, যে ২০১৭ সালে আপনারা কিছু চাকরিপ্রার্থীকে বাড়তি ১ নম্বর দিয়েছেন?

উত্তরে পর্ষদের আইনজীবী বলেন, না। 

এর আগের শুনানির দিন, মামলার সঙ্গে যুক্ত সব পক্ষকে, তাদের বক্তব্য লিখিত আকারে দেওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু, মঙ্গলবারও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ, তাদের বক্তব্য লিখিত আকারে না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার। পর্ষদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এখন দিতে হলে দিন, নাহলে আপনার বক্তব্য আপনার কাছেই রাখুন।


সব মিলিয়ে টেট-দুর্নীতির অভিযোগ, এবং হাইকোর্টের মন্তব্য নিয়ে, তোলপাড় চলছেই।