শিবাশিস মৌলিক, আশাবুল হোসেন ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: তৃণমূল (TMC) যা- বলুক না কেন সিদ্ধান্তে অটল তাঁদের সরকার। করোনা থিতিয়ে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা শুধু। সংশোধিত নাগরিকত্ব (CAA) আইন নিয়ে মাস দুয়েক আগেই বঙ্গসফরে এসে এমন মন্তব্য করে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। এ বার রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumdar) মুখেও সিএএ। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Election 2024) আগে বাংলা-সহ গোটা দেশে সিএএ কার্যকর হবে বলে দাবি করলেন সুকান্ত। 


সুকান্তর মুখে সিএএ


ভোটের বাজারে একসময় গেরুয়া শিবিরে মুখে মুখে ফিরলেও, সাম্প্রতিক অতীতে তাকে ঘিরে বিতর্ক নিস্তেজ হয়ে পড়েছিল। এ বার বাংলার রাজনীতিতে সিএএ বিতর্ক উস্কে দিলেন সুকান্ত। তাঁর সাফ বক্তব্য, "বিজেপি যা বলে তাই করে। রামমন্দির কথা দিয়েছিলাম, করে দেখিয়েছি। সিএএ আমরা বলেছি, সেটাও করে দেখাব।"


কোনও রকম রাখঢাক না করেই সুকান্ত বলেন, "রামন্দিরের ক্ষেত্রে আইনি বাধা ছিল না। আদালতের নির্দেশে হয়েছে। নতুন কোনও আইন তৈরি করতে হয়নি। কিন্তু সিএএ-র ক্ষেত্রে আইনি বিষয় রয়েছে। আমার বিশ্বাস, ২০২৪-এর অনেকটাই আগে আমরা সিএএ কার্যকর করে দেখাব।"


তৃণমূল যদিও সুকান্তর মন্তব্যকে ধর্তব্যের মধ্যে আনতে নারাজ। দলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, "বিপর্যয় ঢাকতে এসব বলছে। বিধানসভা ভোটের আগেও এ সব বলেছিল। কিন্তু মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। আসলে বিজেপি বিভ্রান্তি ছড়িয়ে ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা করছে।"


আরও পড়ুন: TET: বিধায়কদের লেটারহেডে চাকরির ‘সুপারিশ’, টেট-দুর্নীতির মামলায় তুঙ্গে তরজা


তবে শুধু সুকান্ত নন, সম্প্রতি হরিণঘাটার বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার বলেন, "যদি বিল লাগুই না হয়, তাহলে উদ্বাস্তুরা বিজেপি থেকে সরে যাবে এবং ২৪ সালে আগে যদি এটা লাগু না হয়, আমি একটি ভোটের জন্য মানুষের কাছে গিয়ে জোড় হাত করে বলতে পারব না যে, বিজেপিকে ভোট দাও।"


বাংলা-সহ গোটা দেশে সিএএ কার্যকর হবে বলে গত কয়েক বছর ধরেই জানিয়ে আসছেন বিজেপি নেতৃত্ব, যার আওতায় প্রতিবেশি দেশ থেকে অমুসলিম সংখ্যালঘুদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।  নির্বাচনী মরসুমে বাংলাও সরগরম হয়েছিল এই সিএএ নিয়ে। মতুয়া মন জয়ে কোনও কসুর রাখেননি নরেন্দ্র মোদি। ঠাকুরনগরে গিয়ে বড় মা-র পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করা থেকে বাংলাদেশের ওড়াকান্দিতে মতুয়া ধর্মমতের প্রবর্তক হরিচাঁদ ঠাকুরের ভিটেয় যাওয়া, কিছুই বাদ দেননি। 


ফের সিএএ প্রসঙ্গ উস্কে দিল বিজেপি


আর এই সিএএ-কে হাতিয়ার করেই ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে মতুয়া অধ্যুষিত এলাকায় ব্যাপক সাফল্য পেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু আইন চালু হলেও, তা কার্যকরী হয়নি, এই আবহে দু'বছরের মধ্যেই বিধানসভা ভোটে মতুয়া ভোট পেলেও, সেই এলাকাগুলিতে মিশ্র ফল হয় গেরুয়া শিবিরের। আবার আইন তৈরি হওয়ার পর আড়াই বছরেরও বেশি সময় কেটে গেলেও, CAA কার্যকর হয়নি।