কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: জমজমাট শহর। তার মধ্য়েই রয়েছে আইসিডিএস কেন্দ্র। কিন্তু শীতের দিনেও তার মাথার উপর ছাদ নেই। কনকনে ঠান্ডায় খোলা আকাশের নীচে ঘর থেকে আনা চাটাইয়ের উপর বসে রয়েছে প্রায় জনা পঞ্চাশ খুদে। ঠান্ডায় জবুথুবু হয়ে কাঁপতে কাঁপতে দিদিমণির সাথে গলা মিলিয়ে চলছে বর্ণপরিচয়ের পাঠ। আর যখন পড়াশোনা চলছে, তখন পাশেই খোলা আকাশের নীচে হাঁড়িতে ফুটছে খিচুড়ি। এই খুদের বাবা-মায়েরা সকাল হতেই কাজের সন্ধানে বেরিয়ে যান। তাই সকালের খাবার বলতে ভরসা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র (ICDS Centre)। কিন্তু শীতের দিন সকালে খোলা আকাশের নীচে বসে থাকার এমন ছবি কোথায়? 


বর্ধমান পুরসভার (Burdwan Municipality) ২২ নম্বর ওয়ার্ডের আলমগঞ্জ সিদ্ধেশ্বরী রাইসমিল এলাকায় চলে ৫১১ কোড নম্বরের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। শুধু শীত নয়, স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, শীত,গ্রীষ্ম ও বর্ষায় এইভাবেই চলে এই স্কুল। স্থায়ী কোনও পরিকাঠামো না থাকায় রোদ-বৃষ্টি বা শীত উপেক্ষা করেই খোলা আকাশের নীচে বসে পড়াশোনা করতে হয় খুদেদের। কোনও ছাদ না থাকায় বৃষ্টি হলে ছুটি দিয়ে দেওয়া হল স্কুল। কখনও বৃষ্টিতে কাঠ ও উনুন ভিজে যাওয়ায় বন্ধ থাকে রান্নাও। তখন পড়াশোনা তো দূর, সামান্য খাওয়াও ছোটে না খুদেদের।


অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দিদিমণি ঝর্ণা মুখার্জী জানান,বর্ধমান- (Purba Bardhaman) পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডে থাকা এই কেন্দ্রে ৫৭ জন বাচ্চা আসে। বহুবার এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য বলা হয়েছে, লিখিত আকারেও দেওয়া হয়েছে, কিন্তু সমাধান হয়নি। পরিকাঠামোর অবস্থা এতটাই তলানিতে যে সেন্টারের চাল,ডাল, নথিপত্র  রাখারও কোনও জায়গা নেই। স্থানীয় এক বাসিন্দার বাড়ির উঠোনে কোনওরকমে চলছে এই অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্র। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের শিশু ও নারী কল্যাণ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মাম্পি রুদ্র।                   


এই ঘটনায় জেলা প্রশাসনের কড়া সমালোচনা করেছেন বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র। তাঁর তোপ, 'এলাকায় বাচ্চাগুলো কষ্ট পাচ্ছে বারবার দিদিমণি কাউন্সিলর-সহ সকলকে জানিয়েছেন তাতেও সুরাহা হয়নি। আমরা জানতে চাই স্থানীয় কাউন্সিলর,বিধায়ক ও পুরসভার কাজ কী? পরিকাঠামোর অভাবে বাচ্চাগুলো নিয়মিত খাবার পাচ্ছে না।'


আরও পড়ুন: ফ্যাশন শো-এ নজরকাড়া বালুচরী, স্বর্ণচরী! বিষ্ণুপুর মেলায় ব়্যাম্পওয়াক টলি-অভিনেত্রীর