পূর্ব বর্ধমান: এবার SIR আতঙ্কে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুর অভিযোগ। পানিহাটি, ইলামবাজার, টিটাগড়ের পর এবার পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর। SIR আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু পরিযায়ী শ্রমিকের, দাবি পরিবারের।
পানিহাটি, ইলামবাজার, টিটাগড়ের পর এবার আরও একটি মর্মান্তিক ঘটনা রাজ্যের মাটিতে। তামিলনাড়ুতে মৃত্যু হয়েছে জামালপুরের পরিযায়ী শ্রমিকের। ৫১ বছর বয়সী ওই পরিযায়ী শ্রমিকের নাম বিমল সাঁতরা। তিনি মূলত জামালপুরের নবগ্রামের বাসিন্দা। মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের ছেলে জানিয়েছেন,'SIR আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে বাবা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। SIR হলে ভোটার তালিকায় নাম থাকবে কিনা, সেই নিয়ে চিন্তায় ছিলেন। SIR আতঙ্কের জেরেই মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি ছেলের।২৬ অক্টোবর তামিলনাড়ুর হাসপাতালে ভর্তি হন ওই প্রৌঢ়। ৩০ অক্টোবর তামিলনাড়ুর হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। একের পর এক SIR-এ মৃত্যু, দায়ী নির্বাচন কমিশন বলে অভিযোগ তৃণমূলের। SIR-এ মৃত্যু নয়, অন্যকোনও কারণে মৃত্যু হতে পারে, দাবি বিজেপির।
সম্প্রতি ব্যারাকপুর পুরসভা এলাকায় একটি ঘটনা ঘটে। বছর ৩২ এর ওই গৃহবধূর নাম কাকলি সরকার। ২০১০-১১ সালে বিয়ে হয় এবং তারপর ২০১৬ থেকে পাকাপাকিভাবে, এদেশে বসবাস করছিলেন। ভারতীয় নথি তৈরি হয়ে গিয়েছিল। ভোটার কার্ড এবং আঁধার কার্ড। তার স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে তিনি থাকছিলেন। শাশুড়ি যেটা অভিযোগ করছেন যে, NRC এর জন্য তিনি আতঙ্কিত ছিলেন। সেটা তিনি (মৃতা গৃহবধূ কাকলি সরকার) বারবার শাশুড়িকে জানিয়েছিলেন। গতকাল সন্ধ্যায়, শাশুড়ির সঙ্গেই ছিলেন। হঠাৎই তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তারপর অন্যান্য লোকজন গিয়ে দেখতে পায়, বাড়ির দোতালার ছাদে গিয়ে, গায়ে আগুন দিয়ে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। এরপর তাঁকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। সেখানে তাঁকে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
বৃহস্পতিবার রাতে দোতলার ছাদে গায়ে আগুন দিয়ে তিনি আত্মঘাতী হন। তাঁকে উদ্ধার করা হয় মৃত অবস্থায়। দরজায় সাঁটা অবস্থায় উদ্ধার হয় একটি সুইসাইড নোট। আত্মঘাতী মহিলার শাশুড়ি শিবানী সরকার বলেন, দরজার মধ্যে বড় এক পৃষ্ঠা লেখা ছিল। দরজা ধাক্কা দিচ্ছি খুলছে না। ওপর দিয়ে গিয়ে দেখে মরে পড়ে আছে। সূত্রের খবর, শুক্রবার তৃণমূলের পদাধিকারীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেছিলেন, SIR ঘিরে একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। টিটাগড়ে কাকলি সরকার আত্মহত্য়া করেছেন।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন,বাঁকুড়ায় একটা চিতাবাঘ মারা গেছে। তার পিছনেও SIR আছে। তবে পরিবারের একাংশ NRC নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা বললেও, টিটাগড় থানার তরফে জানানো হয়েছে-মহিলার বাবা-মা বাংলাদেশে থাকেন। দীর্ঘদিন তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে যেতে না পারার যন্ত্রণায় ছিলেন। সেই যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সুইসাইড নোটে লিখেছেন, তাঁর মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।