কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান, খাগড়াগড় : বর্ধমানের খাগড়াগড়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে দুয়ারে সরকারের সহায়তা ক্যাম্পে ভাঙচুর। স্থানীয় তৃণমূল নেতার উদ্যোগে কয়েকদিন আগে গ্রামে খোলা হয় দুয়ারে সরকার প্রকল্পের সহায়তা ক্যাম্প। তৃণমূলের ওই গোষ্ঠীর অভিযোগ, গতকাল ক্যাম্পে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালায় সরাইটিকর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যের অনুগামীরা। অভিযুক্তদের পাল্টা দাবি, বেআইনিভাবে ক্যাম্প চলছিল। বন্ধ করতে বলায় মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। তৃণমূল নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।
তৃণমূলেরই একদলের অভিযোগ, স্থানীয় সরাইটিকর পঞ্চায়েতের তৃণমুল সদস্যের অনুগামীরাই এই ভাঙচুর চালিয়েছে। সহায়তা ক্যাম্পে ছিলেন তৃণমুল কর্মী মহম্মদ ইনসান। তিনি জানান, দুয়ারে সরকার ক্যাম্পের জন্য সাধারণ মানুষককে কী কী নথি নিয়ে যেতে হবে, তা বোঝানো চলছিল। স্থানীয় মানুষেরা যাতে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে গিয়ে অসুবিধায় না পড়েন, তার জন্য ইউআরএন নাম্বার পোর্টাল থেকে খুঁজে প্রিন্ট করে দেওয়া হচ্ছিল। খাগড়াগড়ে তৃণমুলের পার্টি অফিসের সামনে চেয়ার, টেবিল পেতে ক্যাম্প চলছিল।অভিযোগ,স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের অনুগামীরা সহায়তা ক্যাম্পে ভাঙচুর চালায়। যদিও পঞ্চায়েত সদস্যের অনুগামীরা তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে পঞ্চায়েত সদস্যের ভাই মহম্মদ হোসেনের অভিযোগ, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অনৈতিক ভাবে ২ দিন ধরে ক্যাম্প করছিল।
অন্যদিকে, শনিবার এক অভিনব ঘটনার সাক্ষী থাকল পানাগড় বাজার হাইস্কুল। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্ম ফিল আপে এগিয়ে এল বিজেপি সিপিএম কর্মীরা। এই নিয়ে যেমন খোঁচাও এসেছে বিপক্ষ শিবির থেকে, তেমনই কেউ কেউ বলেছেন, এটাই তো সরকারের সাফল্য !
সারা বাংলা জুড়ে চলছে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প। সেখানে চলছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্ম বিলি। ফর্ম নিতে উপছে পড়া ভিড়। ক্যাম্পের উল্টোদিকে বসে ফর্ম পূরণে সাহায্য করছেন নেতানেত্রীরা। সেখানেও ভিড় করেছেন অনেকে। সেখানেই কোনও কোনও জায়গায় দেখা গেল, বিরোধী দলের কর্মীদের হাত মেলাতে। সরকারি ফর্ম পূরণে সাহায্য করতে এগিয়ে এলেন সিপিএম ও বিজেপির নেতা-নেত্রী। রাজ্যে সরকারি প্রকল্প ঘিরে এই প্রথম সামনে এল রাজনৈতিক সৌজন্য ও সহযোগিতার ছবি। শনিবার এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল পানাগড় বাজার হাইস্কুল। দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে সিপিএমের প্রাক্তন প্রধান, উপ প্রধান ও বিজেপি নেত্রীকে দেখে প্রথমে অবাক হয়েছিলেন আবেদনকারীরা। শেষ পর্যন্ত ফর্ম পূরণে বিরোধীদের সাহায্য পেয়ে তাঁরা খুশি। যদিও এতে সিপিএম নেত্রী গীতা মণ্ডলের দাবি, 'জনগণের সুবিধার জন্য সরকারি প্রোগ্রামে এসেছি সাহায্য করতে'আবার কাঁকসা ২নং মণ্ডল সভানেত্রী অপর্ণা চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, সরকারি প্রকল্পের সঙ্গে রাজনীতির বিষয় নেই !
তৃণমূল সরকারের প্রকল্প নিয়ে এতদিন বিরোধিতার সুরই শোনা গেছে সিপিএম ও বিজেপির গলায়। এবার উল্টো সুর বিরোধীদের। রাজ্য সরকারের প্রকল্প নিয়ে বিরোধীদের সহযোগিতাকে স্বাগত জানিয়েছে তৃণমূল। রাজ্য সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দিতে তৃণমূলের পাশাপাশি তত্পর বিরোধীরাও।