রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান: 'খেলা হবে। এই খেলার মাঝে যে আসবে সে ফিনিশ হয়ে যাবে'- মেসেজ কাটোয়া (katwa) মহকুমা হাসপাতালের (hospital) সুপারের (super) ফোনে। এতেই শেষ নয়। মেসেজে লেখা,'কাটোয়া হাসপাতালে আমি যা চেয়েছি, তাই হয়েছে। আর যা হবে, সব আমার ইচ্ছেয় হবে'। কিন্তু কে পাঠালেন এমন মেসেজ (message)? অভিযোগের তির এক ঠিকাদারের (contractor) দিকে। সুপার সৌরভ আলমের আরও দাবি, ভুয়ো বিলের টাকা পাশ না করায় তাঁকে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রাণনাশের হুমকিও (threaten) দেওয়া হয়েছে। 


কী হয়েছে?
অভিযুক্ত ঠিকাদারের নাম কিংশুক মণ্ডল। তাঁর নামে কাটোয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার সৌরভ আলম। যদিও কিংশুকের দাবি, কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে তাঁর ৬৫ লক্ষ টাকার বিল বাকি রয়েছে। সেই নিয়ে হাইকোর্টে একটি মামলাও চলছে। মাস দুয়েক আগে কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, ওই ঠিকাদারের বিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখেন তাতে বেশ কিছু অসঙ্গতি রয়েছে। ওষুধের দোকানের প্যাডে সোফা ও চেয়ারের বিল দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু ওষুধের কয়েক গুণ বেশি দাম নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের সৌন্দর্যের জন্য গাছের চারার বিল কয়েক লক্ষ টাকা দেখানো হয়েছে। এ সব দেখেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর বিল আটকে দেয় বলে খবর। অভিযোগ, এর পর থেকেই ওই ঠিকাদার ক্রমাগত হাসপাতাল সুপারের হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করে তাঁকে নানা ভাবে ভয় দেখাতে শুরু করে। মেসেজে দাবি করা হয়, স্বাস্থ্য দফতর পর্যন্ত তাঁর হাত রয়েছে। এর পরেই লেখা, 'এই খেলার মাঝে যে আসবে সে ফিনিশ হয়ে যাবে। শুধু দেখতে থাকুন।' বিষয়টি নিয়ে খবর হতেই ভুয়ো বিলের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে শুরু করল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত হাসপাতালে ঠিকাদারির নামে আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।  এর মধ্যে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল কাটোয়া হাসপাতালের সুপারের ঘরে ঠিকাদারদের বিলের নথি যাচাই শুরু করেছে। এছাড়াও তৎকালীন হাসপাতাল সুপার রতন শাসমলের অনুমোদন করা বিলগুলোর নথিও যাচাই শুরু হয়েছে।
কিন্তু কবে নিষ্পত্তি হবে এই তদন্তের? কবে জানা যাবে সত্যিটা? অভিযুক্ত ঠিকাদার কি সত্যিই হাসপাতালের বিলে হেরাফেরি করতেন? অপেক্ষা তদন্ত-রিপোর্টের। 


আরও পড়ুন:গুমোট গরমে হাসফাঁস, বিকেলে মিলবে কি বৃষ্টির স্বস্তি ?