রাণা দাস, কাটোয়া (পূর্ব বর্ধমান): বাড়ির অমতে বিয়ে। শেষ পর্যন্ত শর্ত সাপেক্ষে বিয়ে মানতে রাজি হয় মেয়ের বাড়ি। কী সেই শর্ত? নতুন জামাইকে স্ত্রীয়ের বাপের বাড়িতে ঘর জামাই হয়ে থাকতে হবে। তা না হওয়ায় মারধর থেকে খুনের হুমকিও আসতে থাকে বলে অভিযোগ। অবশেষে মানসিক অবসাদ ঘিরে ধরে জামাইকে। শেষ পর্যন্ত  গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার পথ বাছল জামাই। ঘটনাটি ঘটে রবিবার সকালে, কাটোয়ার ১ নং ব্লকের খাজুরডিহি গ্রামের। মৃতের নাম সুরজিৎ ঘোষ। 


গত ৪ মাস আগে পূর্বস্থলী দোগাছিয়ার বাসিন্দা প্রিয়া ঘোষের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন কাটোয়ার খাজুরডিহির সুরজিৎ ঘোষ। বিয়ের আগে প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন তাঁরা। সুরজিতের পরিবার সূত্রে দাবি, এই বিয়ে মেয়ের বাড়ি থেকে মেনে নিতে চায়নি। পরবর্তীকালে শর্তসাপেক্ষে বিয়ে মানতে রাজি হয় প্রিয়ার বাড়ির লোক। শর্ত দেওয়া হয়, জামাইকে থাকতে হবে প্রিয়ার বাপের বাড়ি, ঘর জামাই হয়ে। শ্বশুরের শর্ত মেনে নিতে পারেননি সুরজিৎ। তাতেই অঘটন ঘটে বলে অভিযোগ।


পরিবার সূত্রে দাবি, দিন ১৫ আগে রাত্রিবেলা সুরজিতের শ্বশুর ও আত্মীয়রা এসে চড়াও হন তাঁর বাড়িতে। এসে জামাই ও তাঁর বাড়ির লোকজনকে ব্যাপক মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। সেই রাতেই জোর করে তারা মেয়েকেওও নিয়ে চলে যান বলে অভিযোগ। মৃতের পরিবার সূত্রে জানানো হয়, স্ত্রীয়ের খোঁজ নিলে খুন করে দেওয়ার হুমকিও দেন সুরজিতের শ্বশুর। এরপর থেকেই না কি সুরজিৎ ও প্রিয়ার কোনও যোগাযোগ ছিল না। সুরজিতের পরিবারের লোকজনের দাবি, ফোন করে প্রায়ই প্রিয়ার বাবা অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতেন এবং পরিবারের সকলকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিতেন। এতেই আতঙ্ক এবং হতাশায় ভুগতে থাকে সুরজিত, দাবি পরিবারের। 


আরও পড়ুন: West Burdwan News: বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার পথে পাণ্ডবেশ্বরের খোট্টাডিহিতে দুর্ঘটনা, মৃত ৩


রবিবার, খাজুরডিহিতে সুরজিৎ ঘোষের বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয়েছে তাঁর ঝুলন্ত দেহ। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠায় কাটোয়া হাসপাতালে। মৃতের পরিবার সূত্রে দাবি, শ্বশুরবাড়ির ব্যবহারে মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যার চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুরজিৎ। শেষকৃত্য সম্পন্ন হওয়ার পরই সুরজিতের শ্বশুর ও পরিবারের অন্যান্যদের নামে থানে অভিযোগ দায়ের করবে বলে জানিয়েছে মৃতের পরিবার।