রাণা দাস, কাটোয়া : 'কার্তিক বড় হ্যাংলা, একবার আসেন মায়ের সঙ্গে একবার আসেন একলা।' জগদ্ধাত্রী পুজোর পর এবার কার্তিক পুজোয় মেতে উঠল শহর কাটোয়া ।


বারবণিতাদের হাত ধরেই কাটোয়ায় শুরু হয় কার্তিক পুজো। পরবর্তীতে বারবণিতাদের কাছে আসা বণিক ও বাবুদের আভিজাত্য প্রদর্শনীই হয়ে ওঠে কাটোয়ার কার্তিক লড়াই। বর্তমানে কাটোয়া শহরের বিভিন্ন ক্লাবে আলোকসজ্জা,মন্ডপ, বাজনায় জমে ওঠে সুষ্ঠু লড়াই। যা কাটোয়ার ঐতিহ্যবাহী কার্তিক লড়াই নামে পরিচিত। তবে কার্তিকের শোভাযাত্রা যা লড়াই বলে পরিচিত তা কোভিড বিধির কারণে বন্ধ রেখেছে প্রশাসন। 


কাটোয়া শহরের এক প্রান্ত দিয়ে বয়ে গেছে অজয়-ভাগীরথী। অতীতে রেলপথ ও সড়ক পথ তখনও গড়ে ওঠেনি । যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল নদীপথ। ঠিক এই কারণেই কাটোয়া শহরে নদীর ঘাট হরিসভা পাড়া সহ আরও কয়েকটি নদীঘাটে গড়ে ওঠে প্রধান ব্যবসায়িক স্থান। সেই সময়ই কাটোয়ার হরিসভা পাড়ায় গড়ে ওঠে নিষিদ্ধ পল্লি। বারবণিতাদের সন্তান লাভের বাসনা থেকে কাটোয়ার কার্তিক পুজোর উৎপত্তি। বারবণিতাদের মন রাখতে বাবুরা প্রচুর অর্থ ব্যয় করে শুরু করে কার্তিক পুজো। সেই শুরু, এর পর শহরের বিভিন্ন ক্লাব শুরু করে কার্তিক পুজো। 


আজ যা কাটোয়ার কার্তিক লড়াই হিসেবেই পরিচিত । কাটোয়ার কার্তিক পুজোর মূল বৈশিষ্ট্য - থাকা। বাঁশের কঞ্চি দিয়ে থাক থাক করে সাজানো হয় পুতুল। দুপাশে থাকে সখীরা এবং মাঝে পুতুলের মাধ্যমে পৌরাণিক কাহিনি তুলে ধরা হয় । আর সবার ওপরে থাকে কাত্যায়নী ও কার্তিক । একেই বলা হয় কার্তিকের থাকা।


তবে এখন বেশিরভাগ ক্লাব থিমের পুজো শুরু করেছে । কোথাও ফুটে উঠেছে কেরলের কথাকলি নৃত্য। তবে, এখনও বেশ কিছু ক্লাব কার্তিক পুজোর পুরনো ঐতিহ্য কার্তিকের থাকা ধরে রেখেছে। আলোর রোশনাই ও বাজনার আওয়াজে মেতে উঠেছে কাটোয়া শহর। শুধু কাটোয়া শহরের মানুষ নয়, দূর-দূরান্ত থেকে এই কার্তিক পুজো দেখতে ভিড় জমায় বহু মানুষ।