কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: হাত কেটে দিয়েছিল স্বামী। এবার সেই হাত ফিরে পাচ্ছেন রেনু খাতুন। তাঁকে কৃত্রিম হাত দেওয়ার সিদ্ধান্ত পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের।  জেলা পরিষদের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হবে খরচ। খরচ হবে আনুমানিক ৪ লক্ষ টাকা। বর্ধমান রোগী কল্যান সমিতির বৈঠকের প্রস্তাবে সায় জেলা পরিষদের।


এদিকে যখন স্বাভাবিক জীবনের স্বার্থে রেণু খাতুনের জন্য কৃত্রিম হাত দিতে চলেছে পূর্ববর্ধমান জেলা পরিষদ। তখন তার উল্টোদিকে রেনু খাতুন ঘটনায় অভিযুক্ত ৩ জনের জামিন হয়ে যাওয়ায় রেনু জানান, ''আমি আতঙ্কিত, পুলিশের তদন্তে গাফিলতি থাকতে পারে, তার জন্যই হয়তো জামিন পেয়ে গেছে। জামিন হওয়ায় আমি খুব বিস্মৃত। আশঙ্কা করছি আমার উপর ফের হামলা হতে পারে।''



পূর্ববর্ধমান জেলাপরিষদের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কৃত্রিম হাত লাগানো হবে বলে জানিয়েছেন সভাধিপতি শম্পা ধাড়া। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের গৃহবধু রেণু খাতুনের ডান হাত কব্জি থেকে বাদ দেওয়ার পর তাঁর জন্য কৃত্রিম হাতের উদ্যোগ নেয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতি। সমিতির চেয়ারম্যান মন্ত্রী স্বপন দেবনাথে উপস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।তারপরেই এরজন্য সমস্ত ব্যয় পূর্ববর্ধমান জেলাপরিষদ বহন করবে বলে জানিয়ে দেন সভাধিপতি শম্পা ধাড়া। 


উল্লেখ্য, গত ৪ জুন কেতুগ্রামের কোজলসা গ্রামের গৃহবধু রেণু খাতুনকে নার্সিংয়ে চাকরি করতে না দিয়ে তাঁর ডান হাতের কব্জি কেটে দেন স্বামী সেখ সরিফুল ওরফে সিরাজ সেখ বলে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় গোটা রাজ্য জুড়ে। এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁকে নার্সিংয়ে চাকরি দেওয়া হয়। বর্তমানে রেণু খাতুন নার্সিং কলেজে কর্মরত। 



রোগী কল্যাণ সমিতি ও পূর্ববর্ধমান জেলা পরিষদের এই উদ্যোগে খুশি রেনু খাতুন। তিনি জানান, ''এর জন্য সকলকে আমার ও আমার পরিবারের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই। এর ফলে আগামীদিনে আমার কাজ করতে অনেক সুবিধা হবে।'' অন্যদিকে সভাধিপতি শম্পা ধাড়া জানিয়েছেন, ''রেনুর লড়াইকে কুর্ণিশ জানিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সহ অনেকেই তাণকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই রেনুকে সরকারি চাকরিও দেওয়া হয়েছে যেহেতু তার ডান হাত নিয়েই সমস্যা তাই তাঁকে নানাবিধ অসুবিধার মুখে পড়তে হচ্ছিল। তবে এবার রেনু স্বাভাবিক জীবন উপভোগ করতে পারবে, এই আশা সবার।