রাণা দাস, পূর্ব বর্ধমান:  পূর্ব বর্ধমানের কালনায় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বাড়ি না ফেরায় জল্পনা। পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়ে মহকুমাশাসককে ই-মেল ওই কাউন্সিলরের। আর রাজনীতি করতে চাননি, ফোন জানিয়েছেন বলে দাবি কাউন্সিলরের মা-র।


পুর চেয়ারম্যান নির্বাচন ঘিরে ধুন্ধুমার। মন্ত্রীর সামনেই ধস্তাধস্তি! দো’তলা থেকে ঝাঁপ দিতে ছুটেছিলেন তৃণমূল কাউন্সিলর! সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার এক তৃণমূল কাউন্সিলরের বাড়ি না ফেরার অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানের কালনায়।কালনার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর নিউটন মজুমদার। পরিবার সূত্রে খবর, বুধবার পুর চেয়ারম্যান নির্বাচন থাকায় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন।একদিন কেটে গেলেও আর বাড়ি ফিরে আসেননি। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি ফোন করেছিলেন বলে দাবি করেছেন কাউন্সিলরের মা। 


৭ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলরের মা সুশীলা মজুমদার বলেছেন., আজকে দুপুরে ছেলে ফোন করেছিল। বলল মা আমি ভাল আছি। ছেলে বলেছে রাজনীতি করবে না। আমিও চাই রাজনীতি যেন ও না করে।


পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূল জেলা সভাপতি জানিয়েছেন, দলীয়ভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে নিউটন মজুমদার কেন বাড়ি যায়নি তা খোঁজ নিয়ে দেখছি। অন্যদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার সন্ধ্যায় কালনার মহকুমাশাসককে একটি Email পাঠিয়ে কাউন্সিলর পদ থেকে ইস্তফা  দিতে চান নিউটন মজুমদার। এই নিয়ে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক জানিয়েছেন, নিউটন মজুমদারের থেকে একটা ই-মেল পেয়েছি। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 
পূর্ব বর্ধমানের কালনায় চেয়ারম্যানের পদ নিয়ে গতকাল তুমুল অশান্তি হয়। মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের সঙ্গে তর্কাতর্কিও হয়। দল বিরোধী কাজের অভিযোগে তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত  হন ভাইস চেয়ারম্যান।


পূর্ব বর্ধমানের কালনা পুরসভায় ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৭টিতেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল। অথচ শক্ত গড়েই, চেয়ারম্যান কে হবেন, তা নিয়ে খোদ রাজ্যের মন্ত্রীর সামনে তৃণমূলের কোন্দল চরমে ওঠে। কালনা পুরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে তৃণমূল কাউন্সিলর আনন্দ দত্তর নাম ঘোষণা করেছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু, তাঁকে চেয়ারম্যান মানতে রাজি হয়নি তৃণমূল কাউন্সিলরদেরই একাংশ।এতেই তেতে ওঠে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। ছুটে আসতে হয় খোদ মন্ত্রী স্বপন দেবনাথকে। 


বন্ধ ঘরে ভোটাভুটি শুরু হয়। অভিযোগ, সেই সময় তপন পোড়েলের অনুগামীরা, আনন্দ দত্তর অনুগামী কাউন্সিলরদের ঘরের বাইরে বের করে দেন।বন্ধ দরজায় লাথি মারতে থাকেন আনন্দ দত্ত।কিছুক্ষণ পরে খবর আসে,ভোটাভুটিতে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব যাঁকে চেয়ারম্যান করতে চেয়েছিল তিনি পেয়েছেন মাত্র ৪টি ভোট!আর দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যাঁকে ভাইস চেয়ারম্যান করতে চেয়েছিলেন তিনি পেলেন ১২ জন তৃণমূল কাউন্সিলরের সমর্থন!অর্থাৎ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের বাছাই করা চেয়ারম্যান পরাজিত হলেন।


যদিও বিকেলে কালনার পুরপ্রধান নির্বাচনকে বাতিল করে দেন পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক। দল বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে তপন পোড়েলকে বহিষ্কার করে তৃণমূল।