কমলকৃষ্ণ দে,পূর্ব বর্ধমান: নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে এমনিতেই তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। যে মামলায় ইতিমধ্যেই নাম জড়িয়েছে একগুচ্ছ শাসকদলের হেভিওয়েটের। আর এমনই এক আবহে সামনে এল আরও এক বিস্ফোরক তথ্য।  ভিন রাজ্যের কোটায় বর্ধমান মেডিকেলে (Burdwan Medical College) ডাক্তারিতে ভর্তি করে দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকার প্রতারণার (Fraud Case) অভিযোগ উঠল এবার। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্য়েই চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ (Police)। বর্ধমান থানার পুলিশ প্রথমে শক্তিগড় থেকে একজনকে গ্রেফতার করে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কলকাতা ও দুই চব্বিশ পরগনা (Kolkata, North and South 24 Parganas District) থেকে আরও তিনজনকে গ্রেফতার (Arrest) করা হয়। 


ডাক্তারি প্রতারণাকাণ্ডে জড়াল কোন কোন জেলার প্রতারকদের নাম ?


ধৃতদের মধ্যে বিক্রম ঠাকুরের বাড়ি শক্তিগড়ের সিনেমাতলা এলাকায়। এছাড়াও উত্তর চব্বিশ পরগনার দত্তপুকুর বামনগাছি থেকে রহমান সেখ ওরফে রাজু, কলকাতার কসবা থেকে সেখ সন্তু ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার নরেন্দ্রপুর থেকে পীযূষকান্তি ঘোড়ুই নামে আরও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্ধমান মেডিকেল কলেজে ডাক্তারিতে কোটায় ভর্তির করে দেওয়ার নাম করে এক এক জনের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সন্দেহ এড়াতে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ঘরে বসেই পড়ুয়াদের সঙ্গে রফা করেছিল প্রতারকরা ভর্তির নামে লক্ষ লক্ষ টাকা  নেওয়া হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে চারজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এই চক্রের সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত ? মেডিকেল কলেজের কেউ যুক্ত রয়েছে কিনা জানতে ধৃতদের বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। 


মেডিকেল কলেজের নামে জাল সই, ভর্তির নথিপত্র


এক প্রতারিত এনিয়ে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পাশাপশি তিনি বর্ধমান থানাতেও অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগ পাওয়ার পর অধ্যক্ষ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করার জন্য বর্ধমান থানায় জানান। অধ্যক্ষের অভিযোগ পেয়ে বর্ধমান থানার পুলিশ পরিকল্পনামাফিক জাল নথিপত্র তৈরি করে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাৎ-র ধারায় মামলা রুজু করে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে নমিনি কোটায় ভর্তি করে দেওয়ার নাম করে প্রতারকরা বেশ কয়েক জনের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ। কলেজের একটি ঘরেই প্রতারকরা প্রতারিতর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়। এমনকি মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপালের নামে জাল সই করে ভর্তির নথিপত্র দেয়। মেডিকেল কলেজে ভর্তি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কারও কাছ থেকে ২০ লক্ষ, আবার কারও কাছ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা দাবি করছে প্রতারকরা। 


আরও পড়ুন, 'সাক্ষী' হতে চান নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার এজেন্ট শাহিদ ইমাম 


'মেঘালয়ের কোটায় ভর্তির নামে প্রতারণা'


বর্ধমান মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ কৌস্তভ নায়েক বলেন, 'আমার কাছে এনিয়ে তিনটি অভিযোগ আসে। থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। মেঘালয়ের কোটায় ভর্তির নাম করে আমার সই জাল করে প্রতারণা করে। ভর্তি সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের কোনও এক্তিয়ার নেই এটা না জানার জন্য সমস্যা হচ্ছে। পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।' পুলিশ সুপার জানান, 'ধৃতদের ১০ দিন পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানানো হয়েছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হবে।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু বর্ধমানই নয়, একাধিক মেডিকেল কলেজে ছাত্র ভর্তির নামে প্রতারণা করেছে চক্রটি। এই নিয়ে বেশ কয়েকটি অভিযোগ ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে থানায়।'