রাণা দাস, পূর্ব বর্ধমান: কানে রক্ত ঝরা বন্ধ করতে এমসিল (Emcil) আঠা দিয়ে কান সিল করে দিল হাতুড়ে। আর এই এমসিল কাণ্ডে মহাসঙ্কটে পড়লেন  শ্যামল প্রামাণিক (Syamal Pramanik) নামে এক যুবক। কাটোয়া থানার (Katwa Police Station) কোয়ারা গ্রামের বাড়ি  যুবককে গভীর সঙ্কটজনক অবস্থায়  কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক দেখেই অস্ত্রোপচার সিদ্ধান্ত নেয়। অস্ত্রোপচারের পরই যুবক বিপদমুক্ত হয়।  প্রায় একঘণ্টার অস্ত্রোপচারের পর হাসপাতালের  চিকিৎসকরা যুবকের কানের ছিদ্র থেকে এমসিল আঠা বের করলেও তার কানের পর্দা নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে জানান তাঁরা।


 কানে রক্ত ঝরা বন্ধ করতে এমসিল আঠা 


কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের ইএনটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ভাস্করজ্যোতি বর্মন বলেন, এরকম রোগী কোনওদিন পাইনি।  কানেও যে এমসিল  ব্যবহার করা যায় সেটা প্রথম দেখলাম। যুবকের আত্মীয়রা অভিযুক্ত হাতুড়ের  খোঁজ শুরু করেছে। পেশায় গাড়ি চালক শ্যামল প্রামাণিক বুধবার দুপুরে স্থানীয় সিঙ্গি মোড় বাসস্ট্যাণ্ডের এক হাতুড়ের কাছে  কান পরিষ্কার করিয়েছিলেন। অত্যাধিক খোঁচাখুঁচি করায় শ্যামলের কান থেকে রক্ত বের হতে থাকে। হাতুড়ে শ্যামলের কানের  রক্ত বন্ধ করতে 'এমসিল' আঠা কানের ছিদ্রে  লাগিয়ে দিয়েছে বলে শ্যামল বাবুর স্ত্রী সঞ্চিতা প্রামাণিক দাবি করেন।


আরও পড়ুন, কারা টাকা সরাতে সাহায্য করেছে ? ফের ইডি-র জেরার মুখে কুন্তল


'এই ওষুধে কানের রক্ত পড়া বন্ধ হবে, কিছুক্ষণ পর এটা নিজে থেকে খুলে যাবে', কানে এমসিল লাগিয়ে বলেন হাতুড়ে


সঞ্চিতা দেবী আরও বলেন,  শ্যামল বাবুকে হাতুড়ে বলেছিল ,এই ওষুধে কান থেকে রক্ত পড়া বন্ধ হবে এবং কিছুক্ষণ পর এটা নিজে থেকে খুলে যাবে। কিন্তু সিঙ্গি মোড় থেকে  গাড়ি নিয়ে কয়েক কিমি দূরে নিজের বাড়ি কোয়ারা গ্রামে  ফিরে  শ্যামল বাবু  অসুস্থ হয়ে পড়েন।  কানের অসহ্য যন্ত্রণা  মাথায় ছড়িয়ে পড়ে জ্ঞান হারানোর মত অবস্থা হয়। এরপর এদিন সকালে  শ্যামল প্রামাণিককে তার আত্মীয়রা গ্রাম থেকে এনে  কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করে।


শ্যামল প্রামাণিককে দেখেই চিকিৎসকদের সন্দেহ হয়


শ্যামল প্রামাণিককে দেখেই চিকিৎসকদের সন্দেহ হয় কিছু একটা শক্ত পদার্থ কানে ঢুকে আছে। অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন এটা 'এমসিল' জাতীয় শক্তিশালী আঠা। সাধারণত কলের পাইপের ছিদ্র  বন্ধ করতে এই আঠা  ব্যবহার করা হয়। চিকিৎসক ভাস্করজ্যোতি বর্মন বলেন, 'শ্যামলবাবুর প্রচুর ক্ষতি হতে পারত। সময়ে নিয়ে এসেছে তাই বেঁচে গেলেন। তবে কানের পর্দা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কয়েকমাস পর কানের পর্দা করা হবে।'