কেতুগ্রাম, পূর্ব বর্ধমান: সরকারি চাকরি পাওয়ায় তরুণীর হাত কেটে নেওয়ার ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেফতার করল পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম থানার পুলিশ। ধৃতের নাম চাঁদ মহম্মদ শেখ। সম্পর্কে রেণু খাতুনের স্বামী শের মহম্মদ শেখের মাসতুতো ভাই চাঁদ। পুলিশ সূত্রে দাবি, এই চাঁদ মহম্মদ শেখই আরও ২ জন দুষ্কৃতীকে টাকার বিনিময়ে এই কাজে যুক্ত করেছিলেন। ঘটনার পরিকল্পনাও করেছিলেন তিনি।


মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) সালার স্টেশন থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সরকারি চাকরি পাওয়ায় স্ত্রী রেণু খাতুনের (Renu Khatun) ডান হাতের কব্জি থেকে কেটে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর স্বামী শের মহম্মদ শেখের বিরুদ্ধে। রেণুর স্বামী ও আরও ২ অভিযুক্তকে আগেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।  পুলিশ সূত্রে খবর, চাঁদ মহম্মদ শেখ WBCS পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। 


নার্সিংয়ের চাকরির স্বপ্নপূরণে রেণুর পাশে মুখ্যমন্ত্রী। নিজের জেলাতেই পেলেন চাকরি। সরকারি চাকরি পাওয়ায়, রেণুর ডান হাতের কব্জি থেকে কেটে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে। ধৃতকে জেরা করে আরও ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।  


মুখ্যমন্ত্রীর বয়ান: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এই প্রসঙ্গে জানিয়েছিলেন, কাটোয়ার মেয়েটিকে আমরা কাজে লাগাব। রেণু খাতুন। ওবিসি এ ক্যান্ডিডেট। পূর্ব বর্ধমানে রেকমেন্ড করেছে। ওকে ওই জেলাতেই কাজে লাগানো হচ্ছে। ২৯,৮০০ টাকা স্যালারি। নার্সিংয়ের কাজ না করে, অন্য কাজ করবে। ওর ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা আমরা করব। পুলিশ যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবে। অলরেডি অ্যারেস্ট। 


কাজের প্রতি অদম্য ভালবাসা আর অপ্রতিরোধ্য জেদ! এই দুয়ের জোরেই জীবনের সব প্রতিকূলতা থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছেন রেণু খাতুন। হাসপাতালের বেডে শুয়েই প্র্যাকটিস করছেন বাঁ হাতে লেখা।  চিকিত্‍সকরা বলছেন, চিকিত্‍সায় ভালো সাড়া দিচ্ছেন রেণু। মাস খানেক পরই, হয়তো, তাঁর কৃত্রিম হাত লাগানোর ব্যবস্থা করা হতে পারে। 


সরকারি নার্সের চাকরি পাওয়ায়, রেণুর ডান হাতের কব্জির ওপর থেকে কেটে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে। আর এই ঘটনায়, বৃহস্পতিবার আরও ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 


পুলিশ সূত্রে খবর: তরুণীর স্বামী, ধৃত শের মহম্মদ শেখকে জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠে আসে আরও ২ জনের নাম। আসরফ আলি ও হাবিব শেখ। দু’জনকেই মুর্শিদাবাদের ভরতপুর থানা এলাকার তালগ্রাম থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, স্ত্রীর হাত কাটার জন্য এই ২ জনকে সুপারি দিয়ে এনেছিল স্বামী শের মহম্মদ শেখ। 


সামান্য টাকার বিনিময়ে এই দু’জনকে সুপারি দিয়েছিল আক্রান্তের স্বামী। ঘটনার দিন, তাঁদের বাড়িতেই রাতে খাওয়া দাওয়া করে তারা। তারপর, গভীর রাতে এই ঘটনা। ধৃতদের ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জেরায় পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, ঘটনার দিন রাতে, তাদের সঙ্গে ছিল আরও একজন। পলাতক সেই যুবকের খোঁজে চলছে তল্লাশি।