রানা দাস, কাটোয়া (পূর্ব বর্ধমান): পূর্ব বর্ধমানে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল তীব্র চেহারা নিল। ‘হরিদাস পাল’ থেকে ‘চোরেদের সর্দার’, নাম না করে নানা বিশেষণে জেলা সভাপতিকে তুলোধোনা করলেন দলের জেলা সম্পাদক। তা নিয়ে সরগরম শাসক শিবির।


নাম না করেই পূর্ব বর্ধমান জেলার তৃণমূলের নতুন জেলা সভাপতিকে ‘হরিদাস’ বলে প্রকাশ্যে মঞ্চ থেকে হুঁশিয়ারি দিলেন  প্রাক্তন জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথের অনুগামী  বলে পরিচিত তৃণমূলের জেলা সম্পাদক অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম না দিয়েই জেলা সভাপতিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তৃণমূলের স্লোগান দিতে কোন হরিদাস পালের অনুমোদন লাগবে না। ২০১৫ সাল থেকে যাঁরা তৃণমূলে এসেছেন, আজ তাঁদের সম্পত্তির হিসাব চাই ।তৃণমূল দল তার তদন্ত করবে।


এভাবেই চাঁচাছোলা ভাষায় দলেরই জেলা সভাপতিকে নাম উল্লেখ না করে নিশানা করলেন তৃণমূল নেতা। এভাবে প্রকাশ্যে চলে এসে তৃণমূলের আদি ও নব্য গোষ্ঠীর লড়াই


তৃণমূলের পুরনো কর্মীদের কাটোয়ার বিধায়ক ডাকছেন না বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।  পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় তৃণমূল কর্মীদের আলাদা সভা ডেকে, নাম না করে জেলা সভাপতিকে বিঁধলেন জেলা সম্পাদক। 


মাসখানেক আগে জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদে রদবদল হয়। স্বপন দেবনাথকে সরিয়ে দায়িত্বে আনা হয় কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে, ২০১৫ সালে যিনি কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে এসেছিলেন। তারপর থেকেই সুর চড়াচ্ছিল আদি তৃণমূলের একাংশ। এবার তা চরম চেহারা নিল।


তবে জেলা সভাপতি সাফ জানিয়েছেন,  এটা তৃণমুল দলের অনুষ্ঠান নয়,আর অরিন্দম তৃণমূলের সদস্য নাকি জানা নেই। অন্যদিকে প্রাক্তন জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ তাঁর ঘনিষ্ঠ অরিন্দমের পাশে দাঁড়াননি। তিনি  বলেছেন,কোন দলীয় সভা করতে গেলে সভাপতির অনুমতি নিতে হবে।অরিন্দমের বক্তব্য সমর্থন করি না। 


আর এই ঘটনায় তৃণমূলকে বিজেপি কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। তাদের বক্তব্য, এটা নতুন জেলা সভাপতি আর প্রাক্তন জেলা সভাপতির লড়াই। আর এতেই তৃণমূলের নতুন জেলা সভাপতি ও পুরনো জেলা সভাপতির গোষ্ঠীর মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছে ।


কাটোয়ার রবীন্দ্র পরিষদে তৃণমূলের জেলা সম্পাদক অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর অনুগামীদের নিয়ে এক কর্মী সভা করে সেখান থেকে অভিযোগ তুলেছেন,  দলের পুরোনো যে সব কর্মীদের জেলা সভাপতি ডাকছেন না, তাদের নিয়েই এই কর্মীসভা। অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায় এক দিকে যেমন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের অনুগামী, তেমনি বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের স্নেহধন্য বলে পরিচিত। অনুব্রত মণ্ডলকে কেতুগ্রামের এক প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে বলতে শোনা গিয়েছিল যে, কাটোয়ার দায়িত্ব সামলাবেন অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়।  অনেকেরই প্রশ্ন  প্রকাশ্যে না এলেও কি অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই হুঁশিয়ারি পেছনে কি রয়েছে স্বপন দেবনাথ ও অনুব্রত মণ্ডলের ইশারা?