রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান: মঙ্গলকোটের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি খুনে চেন্নাই থেকে সুপারি কিলারকে গ্রেফতার করল সিআইডি। এ বছরের ১২ জুলাই খুন হন মঙ্গলকোটের তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি অসীম দাস। সিআইডি সূত্রে খবর, খুনের পর চেন্নাইয়ে গা ঢাকা দিয়েছিল সুপারি কিলার মহম্মদ সুরজ। সেখানে রাজমিস্ত্রির কাজ করছিল সে। সুরজের সন্ধান পেতে গত পাঁচদিন ধরে রাজমিস্ত্রির বেশে ঘুরছিলেন সিআইডি অফিসাররা। অবশেষে সোমবার ওই সুপারি কিলারকে পাকড়াও করা হয়। সিআইডি সূত্রে খবর, তৃণমূল নেতাকে খুনের জন্য তাকে ৭ লক্ষ টাকা সুপারি দেওয়া হয় বলে জেরায় ধৃত জানিয়েছে। ধৃতকে চেন্নাই থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে রাজ্যে এনে কাল কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হবে। এই নিয়ে মঙ্গলকোটের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি খুনে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৮।
জুলাই মাসে আততায়ীদের বুলেট প্রাণ কাড়ে তৃণমূলের লাকুড়িয়া অঞ্চল সভাপতি অসীম দাসের। ভর সন্ধেয় মঙ্গলকোটের কাশেমনগরে দলীয় কর্মসূচি সেরে, বাইকে বাড়ি ফিরছিলেন তৃণমূল নেতা। রাস্তায় ওঁত পেতে ছিল আততায়ীরা। স্থানীয় সূত্রে পুলিশ জানতে পারে, সিওর বাজারের কাছে পৌঁছতেই, অসীম দাসকে দাদা বলে ডেকে ওঠে এক বাইক আরোহী দুষ্কৃতী। তৃণমূল নেতা বাইক থামাতেই, পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি চালায় আততায়ী!
দাদা বলে কে ডাকল? পরিচিত কেউ? খুনের নেপথ্যে কার ষড়যন্ত্র? রাজনৈতিক কারণ নাকি ব্যক্তিগত শত্রুতা? কী কারণে এভাবে প্রকাশ্যে খুন হলেন তৃণমূলের দাপুটে নেতা? এই প্রশ্নগুলির উত্তর খোঁজা শুরু করে পুলিশ।বুকে গুলি লাগে তৃণমূল নেতা অসীম। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে মঙ্গলকোট ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে, মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
গত লোকসভা ভোটে মঙ্গলকোটের লাকুড়িয়া অঞ্চলে লিড পায় বিজেপি। এরপর লাকুড়িয়ার দায়িত্বে বসানো হয় অসীম দাসকে। তাঁর নেতৃত্বে গত বিধানসভা ভোটে লাকুড়িয়ায় বিজেপিকে টেক্কা দেয় তৃণমূল। তৃণমূল অভিযোগ করে, ভোটে হারের জেরে অসীম দাসকে টার্গেট করে বিজেপি। বিজেপি পাল্টা দাবি করে, বালির বখরা নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই খুন হয়েছেন তৃণমূল নেতা। এইসব নিয়ে রাজনৈতিক বিবাদ চরমে ওঠে।