কমলকৃষ্ণ দে, বর্ধমান: বর্ধমানে (Burdwan) আরও ২ যুবকের মৃত্যুতে রহস্য আরও ঘনীভূত হল। মদ্যপানের কারণেই খাগড়াগড়ের ২ যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন পরিজনরা। যদিও জেলা আবগারি দফতরের (District Excise Office) দাবি, মদের নমুনা পরীক্ষায় অসঙ্গতি মেলেনি! স্বাভাবিকভাবেই বর্ধমানে পরপর মৃত্যুর কারণ ঘিরে তৈরি হয়েছে ধন্দ। ফরেন্সিক রিপোর্টের অপেক্ষায় আছে পুলিশ।


২ যুবকের মৃত্যুতে রহস্য: শুক্রবার ৪, শনিবার ২, রবিবার ২। বর্ধমানে একের পর এক রহস্যমৃত্যু! মদের বিষক্রিয়াতেই কি প্রাণঘাতী বিপদ? অন্তত তেমনই অভিযোগ, মৃত ৬ জনের পরিবারের! মৃত বাপন শেখের বাবা লালন শেখের বলেন, “মদ পান করেই ওরা মারা গেছে।’’ গত ৩ দিনে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যু হয়েছে মোট ৮ জনের। এর মধ্যে রবিবার ভোররাতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ এবং শহরের এক নার্সিংহোমে মারা যান মীর মেহবুব ওরফে বাপ্পা এবং বাপন শেখ নামে খাগড়াগড়ের ২ বাসিন্দা মৃতদের পরিবারের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে বাপ্পা এবং বাপন, বর্ধমানের কলেজ মোড়ের একটি হোটেলে বসে মদ্যপান করে। তারপরই অসুস্থ হয়ে এই পরিণতি। মৃতদের আত্মীয় নেহা খাতুন বলেন, “মা তারা হোটেল থেকে মদ খেয়েছিল, অ্যালকোহলের দ্বারা হয়েছে, অ্যালকোহলেই হয়েছে। অ্যালকোহল ছাড়া কিছু খায়নি।’’


মৃতের পরিবারের তরফে এই অভিযোগ করা হলেও, জেলা আবগারি দফতরের দাবি, দু’টি সংস্থায় পরীক্ষা করানোর পরও সংগৃহীত মদের নমুনায় কোনও অসঙ্গতি পাওয়া যায়নি। জেলা আবগারি দফতরের এনায়েত রাব্বি বলেন, “মদ খেয়ে মারা গেছে কি না বলতে পারব না, দু’ জায়গায় প্রাথমিক রিপোর্টে কোনও অসঙ্গতি পাওয়া যায়নি, লিকার পয়জন হয়নি, অন্য কী কারণে হয়েছে বলা সম্ভব নয়।’’ অন্যদিকে, মৃতদের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে বর্ধমান জেলা পুলিশ খুন, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র-সহ একাধিক অভিযোগে মামলা রুজু করেছে হোটেল মালিক গণেশ পাসোয়ানের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি এই এলাকায় বেআইনি মদ মজুত ও বিক্রির অভিযোগে ৪৬/AC ধারায় মামলা রুজু করেছে আবগারি দফতরও।


সূত্রের খবর, পুলিশও গণেশের হোটেল থেকে মদের নমুনা সংগ্রহ করেছে। হোটেলের মেঝে এবং দেওয়াল থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে নমুনা। ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য তা পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি খাদ্য সুরক্ষা দফতরেরও সহায়তা নিচ্ছেন পুলিশ আধিকারিকরা। কিন্তু দিনের শেষে ধন্দ কাটল না। পরিবারের লোকজন মৃত্যুর জন্য মদে বিষক্রিয়াকে দায়ী করছে। আবগারি দফতরের দাবি, মদে বিষক্রিয়া হয়নি। তাহলে এতজনের মৃত্যু হল কীভাবে? এই প্রশ্ন উঠছেই। সব দিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আপাতত অপেক্ষা ফরেন্সিক ল্যাব ও ভিসেরা রিপোর্টের। তাতেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে মত পুলিশ অফিসারদের।


আরও পড়ুন: Newtown News: অ্যাসবেসটস খুলে বড়সড় লুঠ নিউটাউনের দোকানে ! পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ