কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও পূর্ব বর্ধমান জেলায় করোনা ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নেননি দেড় লক্ষের বেশি মানুষ। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, কোভিড মোকাবিলা পর্যালোচনায় উঠে এসেছে এমনই তথ্য। ভ্যাকসিনের কোটা দ্রুত পূরণ করতে এলাকা ধরে ধরে এবং বাড়িতে গিয়ে প্রচারে জোর দিচ্ছে প্রশাসন।


বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক বাড়ছে করোনা ভাইরাসের ওমিক্রন স্ট্রেনকে নিয়ে। প্রায় ৫০ বারের বেশি চরিত্র বদলানো মারণ ভাইরাসের নতুন প্রজাতি এদেশেও তাণ্ডব চালাবে কিনা, তা নিয়ে বাড়ছে শঙ্কা। এমন একটা আবহে এরাজ্যে সামনে এল উদ্বেগের তথ্য। প্রশাসন সূত্রে খবর, নির্দিষ্ট সময় সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও, পূর্ব বর্ধমান জেলায় এখনও করোনা ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নেননি দেড় লক্ষের বেশি মানুষ।   


জেলা প্রশাসন সূত্রে দাবি, কোথাও দ্বিতীয় ডোজের কোনও ঘাটতি নেই। কিন্তু সংক্রমণের হার এখন কম থাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যেই ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা দেখা যাচ্ছে।


পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ বাগবুল ইসলাম বলেন, "করোনার দ্বিতীয় ডোজের কোথাও কোনও অভাব নেই। কিন্তু দ্বিতীয় ডোজ নিতে অনীহা প্রকাশ পাচ্ছে। অনেকে আছেন পরিযায়ী শ্রমিক, প্রথম ডোজ নিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। অনেকে ভাবছেন করোনা কমে গেছে। দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার প্রয়োজন নেই।অনেকে ভাবছেন দ্বিতীয় ডোজ নিলে জ্বর আসতে পারে, তাই তাঁরাও অনীহা প্রকাশ করছেন। এই অনীহায় নিজের বিপদই বাড়িয়ে তুলছেন।" 


নিয়ম অনুযায়ী, কোভিশিল্ডের প্র'থম ডোজ নেওয়ার ন্যূনতম ৮৪ দিন পরে দ্বিতীয় ডোজ নিতে হয়। কোভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে প্রথম ডোজ নেওয়ার ন্যূনতম ২৮ দিন পরে দ্বিতীয় ডোজ নিতে হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, নির্দিষ্ট সময় সীমা পেরনোর পরেও অনেকে দ্বিতীয় ডোজ নেননি। এই তথ্য সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। 


বিজেপির পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য কল্লোল নন্দন বলেন, "সরকারের উদাসীনতার জন্যই এই রকম পরিস্থিতি। প্রথমে সরকার অভিযোগ করছিলো কেন্দ্র পর্যাপ্ত পরিমাণে ভ্যাকসিন দিচ্ছে না। কিন্তু কেন্দ্রের তরফে যথেষ্ট ভ্যাকসিন দেওয়া হলেও রাজ্যসরকার যে তা যথোপযুক্ত ব্যবহার করতে পারছে না তারই ফল এটা।" অন্যদিকে, পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিত দাস বলেন, "এর জন্য সরকার দায়ী নয়, মানুষের উদাসীনতা দায়ী। সরকার ভ্যাকসিন দিতে আন্তরিক।" 


পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক জানিয়েছেন, দ্বিতীয় ডোজের কোটা পূরণ করতে এলাকা ভিত্তিক প্রচারে জোর দেওয়া হচ্ছে। বাকি থাকা ডোজ নেওয়ার জন্য গ্রামাঞ্চলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সচেতন করা হবে। যাঁদের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে, তাঁরা সংশ্লিষ্ট সরকারি কেন্দ্র থেকে কুপন ছাড়াই ভ্যাকসিন নিতে পারবেন।