রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান: কদিন আগেই খবর পেয়েছিলেন সরকারি পরীক্ষায় পাশ করেছেন। চাকরি মিলেছে নার্সের (Nurse)। খুশির খবর সবার আগে জানিয়েছিলেন স্বামীকেই। কিন্তু, তাঁর হাতেই যে এমন বিপদ হতে পারে। তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি রেুণু খাতুন। সরকারি চাকরি পাওয়ার 'অপরাধে' ঘুমিয়ে থাকার সময় স্ত্রী ডান হাতের কব্জি কেটে নিল তাঁর স্বামী। অভিযুক্তের নাম শের মহম্মদ শেখ। তার একটি মুদিখানার দোকান রয়েছে। ঘটনাস্থল কেতুগ্রামের (ketugram) চিনিসপুর। 


'ভয়াবহ' ঘটনা:
শনিবার রাতে কেতুগ্রামের চিনিসপুরের বাড়িতেই ঘুমিয়ে ছিলেন রেণু খাতুন। অভিযোগ সেই সময় বাড়িতে বন্ধুদের নিয়ে ঢোকেন অভিযুক্ত শের মহম্মদ শেখ। গভীর রাতে অঘোরে ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন রেণু। সেই সময় আচমকা বালিশ চাপা দিয়ে তাঁকে কাবু করা হয়। অভিযোগ, বালিশ চাপা দিয়ে কাবু করে ধারালো অস্ত্রের সাহায্যে রেণুর ডান হাত কব্জি থেকে কেটে নেন অভিযুক্ত। তারপরে সেই অবস্থায় তাঁকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান অভিযুক্ত। পরে দুর্গাপুরের এক নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করা হয় মহিলাকে। খবর দেওয়া হয় রেণুর বাপেরবাড়িতে। মহিলার বাড়ির লোকের দাবি, তাঁরা হাসপাতালে গিয়ে পৌঁছতেই এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় অভিযুক্ত।


লুকিয়ে রাখা হয় 'কাটা হাত'
অভিযোগ, কব্জি কেটে নেওয়ার পর হাসপাতালে নিয়ে গেলেও কাটা হাত বাড়িতেই লুকিয়ে রেখেছিল অভিযুক্ত। চিকিৎসকেরা যাতে কোনওভাবেই হাত জোড়া দিতে না পারে সেই কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। হাত জোড়া না লাগলে চাকরি পাওয়া যাবে না, এমন ভাবনা থেকেই এই কাজ বলে অভিযোগ।


এত আক্রোশ কেন?
মহিলার বাপেরবাড়ির দাবি, স্ত্রী নার্সের চাকরি পাওয়ায় তা ভালভাবে নেননি শের মহম্মদ শেখ। পরিবারের দাবি, তার বন্ধুরা তাকে বোঝায় সরকারি চাকরি পাওয়ায় তাকে ছেড়ে চলে যাবে স্ত্রী। সেই আক্রোশেই বন্ধুদের সাহায্য নিয়ে এমন কাজ করেছে অভিযুক্ত, দাবি রেণুর পরিবারের।  


আক্রান্তের ভাই বলেন, 'আমার বোনটা যাতে চাকরি না পায় তার জন্য পরিকল্পনা করে এমন কাজ করেছে। বোনের সব দরকারি নথিও নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে।' পরিবার জানাচ্ছে, ছোট থেকেই মেধাবী রেণু। তাঁর স্বপ্ন ছিল নার্শ হওয়ার, তার জন্য ট্রেনিংও নেয়। কিন্তু পড়াশোনা করলেও সরকারি চাকরি করা যাবে না, এমনই নাকি দাবি করত অভিযুক্ত।
   
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ শর্মিলা সরকার জানাচ্ছেন, অভিযুক্তের মানসিক পরিস্থিতি কীরকম দেখতে হবে। নেশা করত কিনা দেখা দরকার। মহিলারা স্বামীর উপর আর্থিকভাবে নির্ভরশীল থাকলে নিয়ন্ত্রণ করতে সুবিধা হয়। সেই কারণেই অনেকে চান যাতে স্ত্রী যাতে আর্থিকভাবে নির্ভরশীল থাকেন। ওই ব্যক্তি আগেও অত্যচার করেছে কিনা দেখতে হবে বলে জানাচ্ছেন তিনি।


আরও পড়ুন: অভিষেক বার্তার পর টেন্ডার নিয়মে বদল হাবড়া পঞ্চায়েত সমিতির