সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া বার্তার পর টেন্ডারে কড়াকড়ি শুরু উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 pargana) হাবড়ার এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির। যে কোনও কাজে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে ই-টেন্ডার (E Tender)।


অভিষেকের বার্তা:
গত ২৮ মে হলদিয়ায় দলের শ্রমিক সংগঠনের মঞ্চ থেকে ঠিকাদারি নিয়ে দলীয় নেতাদের কড়া বার্তা দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। সেদিন তিনি বলেছিলেন, 'হয় ঠিকাদারি করো, না হলে তৃণমূল (TMC) করো। দু’টো একসঙ্গে হবে না। যদি ঠিকাদারি করতে চাও, কোনও আপত্তি নেই। যদি তৃণমূল করতে চাও, এই ঝান্ডাটা যেদিন নেবে, ঠিকাদারির বোঝাটা বাড়িতে ফেলে রাখতে হবে।'


কী সিদ্ধান্ত:
তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের ওই বার্তার এক সপ্তাহের মধ্যে টেন্ডার নিয়ে কড়াকড়ি করল উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি।  তৃণমূল পরিচালিত ওই পঞ্চায়েত সমিতির সিদ্ধান্ত,  হাবড়া ১ নম্বর ব্লকের ৭টি গ্রামপঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির যে কোনও কাজে এবার থেকে বাধ্যতামূলক হচ্ছে ই-টেন্ডার। পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে খবর, এতদিন পর্যন্ত সাড়ে তিন লাখ টাকার কম অঙ্কের কাজ হলে মৌখিক টেন্ডার করা হত। এবার থেকে সেই নিয়ম উঠে যাচ্ছে। হাবড়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অজিত সাহা বলেন, 'হাবড়া ব্লক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। ১ লক্ষ টাকার কাজ হলেও ই-টেন্ডার হবে। এর চেয়ে স্বচ্ছতা আর কিছু হতে পারে না।'


বিজেপির কটাক্ষ: 
হাবড়ার বিজেপি (BJP) নেতা পার্থপ্রতিম সরকার বলেন, 'সভাপতি কার্যত স্বীকার করে নিলেন যে টেন্ডার পদ্ধতিতে দুর্নীতি ছিল। পঞ্চায়েত ভোটের আগে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তুলে ধরার চেষ্টা। এক লাখ কেন, এক টাকার কাজও ই-টেন্ডারে হোক।'


অভিষেকের এই ঘোষণার পর সম্প্রতি দলীয় পদ ছেড়েছিলেন ঝাড়গ্রামের এক তৃণমূল নেতা। দলীয় পদ ছেড়েছন বেলপাহাড়ির সিমলার তৃণমূলের বুথ সভাপতি অভিজিৎ দত্ত। কিন্তু কেন? ওই নেতার দাবি, ঠিকাদারি ছাড়া তাঁর পক্ষে সংসার চালানো কঠিন। সেই কারণে সংসার বেছে নিয়ে দলীয় পদ ছাড়লেন তিনি। সিমলার তৃণমূল কর্মী ও প্রাক্তন বুথ সভাপতি অভিজিৎ দত্ত এদিন বলেন, 'রুজি রোজগারের জন্য দলীয় পদ ছাড়লাম।' সিমলা অঞ্চলের ওই প্রাক্তন বুথ সভাপতির দাবি,  দলের জন্মলগ্ন থেকেই তৃণমূলের সৈনিক। পাশাপাশি, সংসার চালানোর জন্য ঠিকাদারিও করেন। ঠিকাদারি ছাড়া তাঁর পক্ষে সংসার চালানো কঠিন তাই, ঠিকাদারি ছাড়তে পারবেন না তিনি। তাই, শীর্ষ নেতার নির্দেশে দলীয় পদ ছাড়ছেন। এমনটাই বলেন তিনি। অভিজিৎ দত্ত বলেন, 'দল করব দল যেভাবে বলবে তাই করব। ঠিকাদারি থেকেই সংসার চলে। দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছি।' 


আরও পড়ুন: উত্তরে বৃষ্টির স্বস্তি, দক্ষিণবঙ্গে বর্ষার অপেক্ষা-অস্বস্তি