রাণা দাস, পূর্ব বর্ধমান: শিশুকন্যাকে চানাচুর খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে ধর্ষণ (Rape) করে খুন (Murder) করার অভিযোগে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিল আদালত। যদিও অভিযুক্তের বাবা আদালতের সাজা ঘোষণাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা বলেন এদিন। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানে (Purba Bardhaman)।


২০১৮ সালে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনার রায় ঘোষণা-


আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা নাগাদ খাসপুরের পূর্ব পাড়ার রেবিনা বিবির পাঁচ বছরের শিশুকন্যাকে চানাচুর খাওয়ার লোভ দেখিয়ে নিয়ে যায় জাহাঙ্গির চৌধুরী নামে এক যুবক। পেশায় সে পরিযায়ী শ্রমিক। কিন্তু মেয়ে দীর্ঘক্ষণ না ফেরায় তার মা তাকে খুঁজতে বেরোয়। সেই সময় অভিযুক্ত জাহাঙ্গির শিশুর মা-কে জানায় যে সে বাড়ি ফিরে গিয়েছে। কিন্তু বাড়ি ফিরেও মেয়েকে পান না মা। খোঁজ চলতে থাকে নানা জায়গায়। কোথাও পাওয়া যায় না ওই শিশুকন্যাকে। পরদিন অর্থাৎ ১৫ ফেব্রুয়ারি বেলার দিকে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরের একটি ডোবা থেকে শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সেইদিনই শিশুর পরিবারের লোকেদের অভিযোগের ভিত্তিতে জাহাঙ্গির চৌধুরী নামে ওই যুবককে গ্রেফতারও করে পুলিশ। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে শিশুটির যৌনাঙ্গসহ দেহের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। তদন্ত চলাকালীন পুলিশ অভিযুক্তের বাড়ি থেকে শিশুর গলার পুঁতির মালা উদ্ধার করে।


আরও পড়ুন - Purba Bardhaman News: ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলায় কোপ, ঘুমন্ত স্ত্রীকে খুন স্বামীর


শিশুকন্যাকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে রায় ঘোষণা আদালতের-


এরপর ২০১৮ সালের ১৫ মে কাটোয়ার পকসো আদালতে চার্জশিট জমা করে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ। চার্জশিটে অভিযুক্ত জাহাঙ্গির চৌধুরির বিরুদ্ধে শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করে খুন করার অভিযোগে মামলা শুরু হয়। এই মামলায় সাক্ষ্যদান করেন ১৫জন। সমস্ত সওয়াল জবাব, সাক্ষীদের বয়ান শোনার পর গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার পকসো আদালতের বিচারক সুকুমার সুত্রধর দোষী সাব্যস্ত করেন জাহাঙ্গির চৌধুরীকে। শুক্রবার বিচারক রায় দিতে গিয়ে জানান, এটা বিরলতম ঘটনা। সেই কারণেই অভিযুক্তকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়াহল। অভিযুক্ত যুবকের মৃত্যুদণ্ডের রায় শোনার পর জাহাঙ্গির চৌধুরির পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এক আত্মীয়া আদালতেই জ্ঞান হারান। অন্যদিকে, অভিযুক্তের বাবা সিরাজ চৌধুরী বলেন, 'আমার ছেলে নির্দোষ। তাকে ফাঁসিয়ে শাস্তি দেওয়া হল। এই রায় আমি মানি না। আমার ছেলের সুবিচারের জন্য উচ্চ আদালতে যাব।'