রাণা দাস, কাটোয়া : কার্তিক পুজোয় মেতে উঠল কাটোয়া শহর। বড় বড় মণ্ডপ, আলোক মালায় সেজে উঠেছে শহর। কাটোয়ার কার্তিক পুজো কার্তিক লড়াই হিসেবে খ্যাত। Purba Burdwan News Katwa Kartik Puja 2024


কীভাবে শুরু ?


বারবনিতাদের হাত ধরে আজ থেকে ৪০০ বছর আগে শুরু হয়েছিল কাটোয়ার কার্তিক পুজো। কাটোয়া শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ভাগীরথী নদী। সেই সময়  নদী পথে চলত বাণিজ্য। কলকাতা সহ বিভিন্ন জেলার বাবুদের আনাগোনা লেগে থাকত কাটোয়া শহরে। তাঁদের জন্যই ভাগীরথীর তীরে গড়ে উঠেছিল বারবনিতাদের মহল্লা। পুত্র- লাভের আশায় বারবনিতারা সেই সময় করত কার্তিক পুজো। বাবুদের টাকায় সেইসব পুজোয় আসত কলকাতা থেকে ঝাড় লন্ঠন, বিভিন্ন বাজনার দল। তৈরি হত কার্তিকের থাকা। তবে আজ বাবু ও বারবনিতাদের মহল্লা না থাকলেও, তাদের সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেছে কাটোয়ার মানুষ। মহা ধুমধামে পালিত হয় কার্তিক পুজো। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে থিমের প্যান্ডেলের কদর বেড়েছে। কার্তিকের শোভাযাত্রা এখানে লড়াই বলেই খ্যাত। আর যা দেখার জন্য দূর দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন এই শহরে।


এমনও শোনা যায় যে, জমিদারদের লেঠেলদের মধ্যে কার্তিক ঠাকুর বিসর্জনের সময় প্রতিযোগিতা চলত। সেই সময় এই লেঠেলদের মধ্যে লাঠি খেলা হত। যা কার্যত আগত মানুষজনের বিনোদনের মাধ্যম হয়ে উঠত। এমনকী বিজয়ীদের পুরস্কৃতও করা হত জমিদারদের তরফে। এভাবেই প্রসিদ্ধ হয়ে ওঠে জমিদারি আমলের কার্তিক লড়াই।


শিব ও পার্বতীর সন্তান। গণেশের সহোদর। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, কার্তিককে যুদ্ধের দেবতা ও দেব সেনাপতি বলা হয়। কার্তিককে সাধারণত চিরযৌবনপ্রাপ্ত যুবক হিসাবে চিত্রিত করা হয়। পারবনি নামে এক ময়ূর বাহনে আসীন থাকেন তিনি। ভারতের অন্য যে কোনও অংশের থেকে দক্ষিণ ভারতে কার্তিক পুজো বেশি জনপ্রিয়। পুরাণ অনুযায়ী, তারকাসুরকে বধ করার জন্য তাঁর জন্ম হয়েছিল। আমাদের রাজ্যে একটি জনপ্রিয় প্রথা চালু রয়েছে। সেই অনযায়ী, বিয়ে হয়েছে, অথচ এখনও সন্তান আসেনি, এমন দম্পতির বাড়ির সামনে কার্তিক ঠাকুরের মূর্তি ফেলা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে, সেইমতো দেবতার পুজো করলে মনোকামনা পূরণ হয়।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।