মঙ্গলকোট : পুলিশকে 'নপুংসক' বলছেন তৃণমূল বিধায়ক। টাইম লাইন বেঁধে দিয়ে অঞ্চল সভাপতি হুমকি দিচ্ছেন, চুড়ি পরিয়ে দেওয়ার। তৃণমূলের ব্যানার পোড়ানোকে কেন্দ্র করে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। আর তার জেরেই মঙ্গলকোটের বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী ও তৃণমূলের ক্ষীরগ্রামের অঞ্চল সভাপতি মাসুদুর রহমান ওরফে মুকুলের হুমকির মুখে পড়তে হয় মঙ্গলকোট থানার কৈচর ফাঁড়ির IC-কে। হুমকি-হুঁশিয়ারির ভিডিও ভাইরাল।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবির ব্যানার পোড়ানোকে কেন্দ্র করে এই ঘটনার সূত্রপাত। মঙ্গলকোটের বিধায়ক ও বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতির দু'টি গোষ্ঠী আছে বলে অভিযোগ। বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহারের একটি এনজিও সংস্থার রক্তদান শিবিরের ব্যানারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া ব্যানার বিভিন্ন জায়গায় টাঙানো হয়। অভিযোগ, মঙ্গলকোটের বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরীর লোকজনেরা নাকি সেই ব্যানার খুলে দেন। অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দিয়ে তৈরি তৃণমূলের একটি ব্যানার তারপরেই পুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
এরপরেই মঙ্গলবার দুপুরে মঙ্গলকোটের বিধায়ক ও ক্ষীরগ্রামের তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মাসুদুর রহমান ওরফে মুকুলের নেতৃত্বে মঙ্গলকোট থানার কৈচড় ফাঁড়ির সামনে রাস্তা অবরোধ করে অভিযুক্তদের গ্রেফতারির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী কৈচর ফাঁড়ির আইসি ও অন্য অফিসারদের সামনে দাঁড়িয়ে বলছেন, এই নপুংসক পুলিশ আমাদের দরকার নেই। পুলিশ ব্যানার কারা পুড়িয়েছে, তার প্রমাণ চাইলে বিধায়ককে বলতে শোনা যায়, কারো গায়ে হাত পড়লে, না দেখলে অ্যারেস্ট করবেন না তো, বিনা প্রমাণে কিন্তু সারা মঙ্গলকোট জ্বলবে।
অন্যদিকে বিধায়কের সামনে অঞ্চল সভাপতি মুকুল রহমান পুলিশকে বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি পোড়াচ্ছে, একটা পর্যন্ত সময় থাকল, তা না হলে আপনাদের হাতে চুরি পরিয়ে দেব। এমএলএ সাহেব আছেন, ওঁর জন্য আমি এখনও শান্ত হয়ে আছি, আমি বাড়ি থেকে বের করে তুলে নিয়ে আসব। মুখ্যমন্ত্রীর ছবি পুড়িয়েছে আমরা ছেড়ে কথা বলব না। পুলিশ চুরি পরে বসে থাকবে আর আমরা মেনে নেব ?
মঙ্গলকোট তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী বক্তব্য, আমার মুখ্যমন্ত্রীর ছবি যে পোড়াবে তাদের পুলিশ ধরতে না পারলে আমি তো সেটা বলব, পুলিশ আছে কি জন্য। তবে তারপর পুলিশ ব্যবস্থা নেবে বলায় আর কোন আন্দোলন করিনি।
তিনি পাশে দাঁড়িয়েছেন মুকুলেরও। তাঁর বক্তব্য, 'মুখ্যমন্ত্রীর ছবি পোড়ালে কার মাথা ঠিক থাকে, সে কি করে বসে থাকতে পারে।'
অন্যদিকে বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহারের বক্তব্য, 'মুখ্যমন্ত্রীর ছবি যারা পুড়িয়েছে, পুলিশ সঠিক তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক, প্রশাসনকে হুমকি দিয়ে কথা বলা যায় না। এটা দলীয় শৃঙ্খলার মধ্যে পড়ে না। ' তবে পুলিশ এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে চায়নি।