কমলকৃষ্ণ দে ও মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পূর্ব বর্ধমান: আউশগ্রামে তৃণমূল নেতা খুনে গ্রেফতার দলেরই তিন নেতা-কর্মী। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় ধৃতরা জানিয়েছেন, টেন্ডার নিয়ে গোলমাল ও তৃণমূল নেতার জনপ্রিয়তার কারণেই খুন করা হয়েছে। এজন্য নিয়োগ করা হয় সুপারি কিলার। এদিকে, এই ঘটনায় ফের তরজায় জড়িয়েছে তৃণমূল-বিজেপি। 


টেন্ডার নিয়ে গন্ডগোল? ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় দলের মধ্যেই আক্রোশ? তার জেরেই কি খুন হতে হল পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের দেবশালা পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের ছেলে চঞ্চল বক্সীকে? খুনের জন্য কি সুপারি কিলার লাগানো হয়েছিল? পুলিশি তদন্তে উঠে আসছে এরকমই নানা প্রশ্ন। তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় রবিবার ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট। ধৃত আসানুল মণ্ডল ও মণির হোসেন মোল্লা আবার, দেবশালা পঞ্চায়েতেরই তৃণমূল সদস্য।


অন্যদিকে, আরেক ধৃত বিশ্বরূপ মণ্ডল, তৃণমূলেরই অঞ্চল সভাপতি হিমাংশু মণ্ডলের ছেলে। যিনি নিজেও এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় ধৃতরা জানিয়েছে, পঞ্চায়েতে বিভিন্ন কাজে টেন্ডার নিয়ে গন্ডগোল চলছিল। পঞ্চায়েত প্রধানের ছেলের মদতেই সব কাজ হত।


তৃণমূল নেতা হিসেবে এলাকায় ক্রমেই জনপ্রিয়ও হয়ে উঠছিলেন চঞ্চল। পুলিশ সূত্রে অনুমান, সম্ভবত সেই আক্রোশেই খুনের ছক কষা হয়। পুলিশ সূত্রে আরও দাবি, 
ধৃতরা জানিয়েছে, চঞ্চলকে খুনের জন্য লক্ষাধিক টাকা দিয়ে সুপারি কিলার নিয়োগ করা হয়েছিল।


তৃণমূল নেতা খুনে অভিযুক্ত বিশ্বরূপ মণ্ডলের দাবি, তারা কেউ জড়িত নয়। এদিকে, তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায়, তৃণমূলেরই তিন নেতা-কর্মী ধরা পড়ায়, কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছে বিজেপি।


বর্ধমানের বিজেপি নেতা কল্লোল নন্দন জানিয়েছেন, বেআইনি অস্ত্রের ভাণ্ডার রয়েছে, তা উদ্ধার করতে হবে নাহলে আন্দোলন চলবে, টাকার লড়াই, পঞ্চায়েতে কাটমানি ও টেন্ডারের লড়াই, বিজেপি খুনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল 


পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলছেন, বিজেপির বোঝা উচিত যে দোষী তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, আইনের শাসন আছে বলে তৃণমূলের লোককে গ্রেফতার করেছে, এটা উত্তরপ্রদেশ-বিহার নয়, অন্যায় করে কেউ পার পাবে না, কাটমানি নেওয়ারা বিজেপিতে আছে। খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র ও নিহত তৃণমূল নেতার জামা ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।