কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান : দেওয়ানদিঘির পর বড়নীলপুর, বর্ধমানে (Burdwan) ফের সিপিএমের পার্টি অফিসে হামলা ও তালা লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের (TMC) বিরুদ্ধে। শাসক বিধায়কের হুমকির জের, দাবি করেছে সিপিএম (CPM)। যদিও এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই বলে পাল্টা দাবি তৃণমূলের।
বৃহস্পতিবার বর্ধমান দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক খোকন দাস হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, 'মমতা ব্যানার্জী ও অভিষেক ব্যানার্জী নির্দেশ দিয়েছে শান্ত থাকতে, তাই শান্ত আছি। সিপিএম যে তাণ্ডব করেছে, তা বন্ধ করা ৫ মিনিটের ব্যাপার ছিল।' যার পরই বর্ধমানের দেওয়ানদিঘিতে সিপিএমের এরিয়া কমিটির অফিসে হামলার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এবার হামলার অভিযোগ উঠল বর্ধমানের বড়নীলপুর বাজারে সিপিএমের ৪ নম্বর লোকাল কমিটির অফিসে। ভেঙে দেওয়া হয়েছে পার্টি অফিসের সামনে থাকা শহিদ বেদি। গেটে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে তালা।
বর্ধমানে ধুন্ধুমার
সিপিএমের আইন অমান্য কর্মসূচি ঘিরে বুধবার তুলকালাম বাধে বর্ধমান শহরের কার্জন গেট এলাকায়। যেদিন পুলিশকে লক্ষ্য করে উড়ে গিয়েছিল ইট, ভেঙে দেওয়া হয় বিশ্ব বাংলা লোগো লাগানো ফলক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জলকামান ছোড়ে পুলিশ। পাশাপাশি লাঠিচার্জও করে পুলিশ (Police)। সেদিন বড়নীলপুর থেকেই শুরু হয়েছিল সিপিএমের আইন অমান্য কর্মসূচির মিছিল। যা ঘিরে পরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় কার্জন গেট লাগোয়া এলাকা।
রাজনৈতিক তরজা
এদিন সেখানকার পার্টি অফিসেই হামলার অভিযোগ ওঠে। শুক্রবার সকালে দলীয় নেতৃত্বের উপস্থিতিতে মেশিন দিয়ে তালা কেটে পার্টি অফিসে ঢোকেন সিপিআইএম কর্মীরা। সিপিএমের অভিযোগ, হামলার নেপথ্যে রয়েছে তৃণমূল। আর এই ঘটনা ঘিরে নতুন করে শুরু হয়েছে দু’দলের চাপানউতোর!
বর্ধমানের সিপিএম জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, '৩১ অগাস্ট বর্ধমানে সিপিএমের আইন অমান্য আন্দোলনকে কেন্দ্র করে মানুষের যে স্বতঃস্ফূর্ত জমায়েত, তাকে ভয় পেয়ে তৃণমূল প্রতিহিংসাবশত এই ধরনের কাজ করছে। যা গতকালই বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাসের কথাতেই স্পষ্ট। গতকাল খোকন দাস যে বক্তব্য দেয় এই ঘটনা তারই প্রতিফলন।' পাল্টা বর্ধমানের তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেছেন, 'এই ঘটনার সাথে তৃণমূল যুক্ত নয়। গত ৩১ অগাস্ট সিপিএম আন্দোলনের নামে বর্ধমান শহরে যে তাণ্ডব চালিয়েছে, তাতে মানুষ তাদের ঘৃণার চোখে দেখছে। তাই মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতে সিপিএম ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেরাই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।'
সব মিলিয়ে সিপিএমের আইন অমান্য কর্মসূচি ঘিরে ক্রমশ চড়ছে তৃণমূল-সিপিএমের তরজার পারদ।
আরও পড়ুন- 'কয়লা ভাইপোর কথায় তো তদন্তকারী সংস্থা চলবে না' নাম না করে অভিষেককে আক্রমণ শুভেন্দুর