কমলকৃষ্ণ দে, বর্ধমান : জাল সার্টিফিকেটে পাসপোর্ট। হুগলির সিঙ্গুর থেকে ২ জনকে গ্রেফতার করল বর্ধমান পুলিশ। পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছিলেন বর্ধমানের বাসিন্দা রিঙ্কা দাস। বার্থ সার্টিফিকেট ভেরিফিকেশন করতে গিয়েই জালিয়াতি সামনে আসে বলে খবর। জাল নথি দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় রিঙ্কা দাসকে। ধৃতকে জেরা করে বর্ধমান শহর থেকে স্বরূপ রায়কে গ্রেফতার করা হয় এবং স্বরূপকে জেরা করেই সিঙ্গুরে গণেশ চক্রবর্তী-অনির্বাণ সামন্তের হদিশ মেলে। টাকা দিয়ে জাল সার্টিফিকেটের ঘটনায় একের পর এক গ্রেফতার। 

Continues below advertisement

কী ঘটনা ?

রিঙ্কা দাস নামে এক মহিলা পাসপোর্টের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। আবেদন জানানোর পর বর্ধমান জেলার অফিসে তথ্য ভেরিফিকেশনের জন্য আসেন। পুলিশ ভেরিফিকেশন করে তাঁকে জন্ম শংসাপত্র দিতে বলেন। তখন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সার্টিফিকেট দেন তিনি। এরপর ডিআইবি অফিস থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে জানতে চাওয়া হয়। তখন বর্ধমান হাসপাতালের তরফ থেকে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়, রিঙ্কা দাস যে জন্ম সার্টিফিকেট দিয়েছেন সেটা জাল।

Continues below advertisement

এরপর ডিআইবি-র তরফ থেকে বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ তদন্তে নেমে প্রথমে রিঙ্কা দাসকে গ্রেফতার করে। তাকে জিজ্ঞাসা করে পুলিশ জানতে পারে, টাকার বিনিময়ে সে সেই সার্টিফিকেট কিনেছে বর্ধমান শহরেরই এক বাসিন্দার কাছ থেকে। সেই বাসিন্দার নাম স্বরূপ রায়। তাকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, এই ঘটনার মূল চক্রী হুগলির সিঙ্গুরের বাসিন্দা। এরপর গতকাল রাতে বর্ধমান থানার পুলিশ সিঙ্গুরে অভিযান চালায়। সিঙ্গুরে অভিযান চালানোর পর পুলিশ দুই জনকে গ্রেফতার করেছে। প্রথম গণেশ চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করা হয়, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অনির্বাণ সামন্তের হদিশ মেলে। তাকে গ্রেফতার করা হয়। এদিন তাদের বর্ধমান আদালতে তোলা হলে বিচারক ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে পাসপোর্ট জালিয়াতিকাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছে কলকাতা পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত এক সাব ইনস্পেক্টরকে। ধৃত আব্দুল হাই, সিকিউরিটি কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের পাসপোর্ট সেকশনে কর্তব্যরত ছিলেন। এই নিয়ে পাসপোর্টকাণ্ডে গ্রেফতার করা হল মোট ৯ জনকে।

সিকিউরিটি কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের পাসপোর্ট সেকশনে, এনকোয়ারি অফিসার বা ভেরিফাইং অফিসার ছিলেন তিনি। ওই বিভাগে আড়াই বছর চাকরি করার পর, ২০২৩-এর ৩১ অক্টোবর অবসর নেন আব্দুল হাই।

পুলিশ সূত্রে দাবি, কর্মজীবনেই পাসপোর্ট জালিয়াতিকাণ্ডের কিংপিন মনোজ গুপ্ত, সমরেশ বিশ্বাস ও ধীরেন ঘোষদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল ধৃত প্রাক্তন SI-এর।

শুক্রবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় অবসরপ্রাপ্ত সাব ইনস্পেক্টরকে।